দুর্নীতি প্রতিরোধে একত্রে কাজ করবে দুদক, টিআইবিঃ দুদককে অর্থ পাচার ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে সহযোগিতা করবে এফবিআই


দুর্নীতি প্রতিরোধে একত্রে কাজ করবে দুদক, টিআইবিঃ
দুদক ও টিআইবি দুর্নীতি প্রতিরোধে একত্রে কাজ করবে। দুর্নীতির শেকড়ের অনুসন্ধান করে তা উত্পাটনের চেষ্টা করা হবে। গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) মধ্যে এক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ এ কথা বলেন। দুদক ও টিআইবির মধ্যে দুর্নীতি প্রতিরোধ সংক্রান্ত কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য দুই বছর চার মাস মেয়াদি এই সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। দুদকের পক্ষে প্রতিষ্ঠানটির মহাপরিচালক ড. শামসুল আরেফিন ও টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান নিজ নিজ প্রতিষ্ঠানের পক্ষে সমঝোতা স্মারকে স্বাক্ষর করেন।
দুর্নীতি প্রতিরোধে গণশুনানির কার্যকারিতার ওপর গবেষণা, অ্যাডভোকেসি, সক্ষমতা বৃদ্ধিমূলক কার্যক্রম, ব্যবস্থাপনা সংক্রান্ত বিষয়াদিসহ মোট ১৫টি বিষয়ে দুর্নীতি দমন কমিশন ও টিআইবি পারস্পরিক সহযোগিতায় কার্যক্রম পরিচালনা করবে। দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদ বলেন, টিআইবি বিভিন্ন ইস্যুতে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ অনেক প্রতিষ্ঠানের সমালোচনা করে থাকে। দুর্নীতি দমন কমিশন সমালোচিত হয়েও, সেই সমালোচক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে পারস্পরিক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করেছে। সমালোচক ও সমালোচিত এক সঙ্গে যে কাজ করতে পারে তা একটি অনন্য দৃষ্টান্ত।
দুদক চেয়ারম্যান বলেন, দুর্নীতি দমনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে রাজনৈতিক অঙ্গীকার। এবারের বাজেটে আমরা যে পরিমাণ অর্থ চেয়েছি তা পেয়েছি। এটা দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের রাজনৈতিক অঙ্গীকারের বহিঃপ্রকাশ। তিনি বলেন, দুর্নীতির কারণেই মানুষ সরকারি সেবা পায় না, কালো টাকার সৃষ্টি হয়, সেই টাকাই বিদেশে পাচার হয়, দুর্নীতির টাকাই সন্ত্রাসসহ বিভিন্ন অপরাধে ব্যবহূত হয়। আর ক্ষতিগ্রস্ত হয় দেশের জনগণ, সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে পরবর্তী প্রজন্ম। আমরা সবাই মিলে এমন একটা দেশ রেখে যেতে চাই যেখানে দুর্নীতির কালো ছায়া থাকবে না।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, টিআইবি ও দুদকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য অভিন্ন। তবে টিআইবি শুধু প্রতিরোধমূলক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারে। প্রতিকারমূলক কার্যক্রমের একমাত্র কর্তৃপক্ষ দুদক। তিনি বলেন, কমিশনের বর্তমান চেয়ারম্যানের নেতৃত্বে কিছু কার্যক্রমের ফলে কমিশনের প্রতি মানুষের আস্থা যেমন বেড়েছে, তেমনি প্রত্যাশাও বেড়েছে। তাই সবার উচিত কমিশনের পাশে দাঁড়ানো। যার যার অবস্থান থেকে দুদককে সাহায্য করতে হবে। এ সময় দুদক কমিশনার এএফএম আমিনুল ইসলাম, দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল, মহাপরিচালক ড. শামসুল আরেফিন, মঈদুল ইসলাম, ফরিদ আহমদ ভূঁইয়া, মো. আসাদুজ্জামান, আতিকুর রহমান খান, মোহাম্মদ মুনীর চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
সূত্রঃ সকালের খবরদুদককে অর্থ পাচার ও প্রযুক্তিগত বিষয়ে সহযোগিতা করবে এফবিআই
দেশের বিভিন্ন দুর্নীতির তদন্ত, সাইবার ক্রাইম ও বিদেশে সরকারি অর্থপাচার প্রতিরোধে প্রশিক্ষণ প্রদানসহ কয়েকটি ক্ষেত্রে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) সহযোগিতা করবে যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা ফেডারেল ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-এফবিআই।
সোমবার দুপুরে দুদক কার্যালয়ে দুদক চেয়ারম্যান ইকবাল মাহমুদের সঙ্গে এফবিআইয়ের দুই প্রতিনিধির বৈঠক হয় বলে দুদকের উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) সূত্র হতে জানা যায় যে, ওই বৈঠকে দুদকের পক্ষে উপস্থিত ছিলেন দুদক চেয়ারম্যান ও দুদকের মহাপরিচালক। অপর দিকে এফবিআই প্রতিনিধি দলে ছিলেন জেমস প্রাইস ও ডেভিড ইনট। এদিকে উপ-পরিচালক প্রণব কুমার ভট্টাচার্য্য আরো জানান, তদন্ত ও প্রশিক্ষণ সংক্রান্ত বিষয়ে দুটি সংস্থার মধ্যে গুরুত্বপূর্ন আলোচনা হয়।
বিশেষ করে বিদেশে অর্থ পাচার প্রতিরোধ, বিশেষ করে ট্রেড বেইজড মানি লন্ডারিং, সাইবার ক্রাইম প্রতিরোধ, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে অপরাধ ও অর্থ পাচার বন্ধে দুদকের কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত প্রশিক্ষণসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে সহযোগিতা করতে এফবিআই প্রতিনিধিরা আশ্বাস দিয়েছেন।