ফাইনাল খেলা ১৪ জনের ১৩ জনই কিংস কন্যা

গতকাল ফাইনালে মাঠে নামা ১৪ ফুটবলারের ১৩ জনই গত দুই বছর লিগ খেলেছেন বসুন্ধরা কিংসের জার্সিতে। জাতীয় বয়সভিত্তিক দলগুলোতে সব ফুটবলারের একসঙ্গে হওয়া হয়না কখনো। সাবিনা খাতুনই যেমন সিনিয়র দল ছাড়া মারিয়া মান্দা, মনিকা চাকমাদের সঙ্গে খেলার সুযোগ পাননা। গতবছর অনুর্ধ্ব-১৯ সাফ চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ, সেখানেই তো কৃষ্ণা রানী সানজিদা আক্তার বা সিরাত জাহান ছিলেন না। মূল দলে এই সিনিয়র- জুনিয়র সবাই যখন এক হন, তখন নিশ্চয় ক্লাব ফুটবলে গড়া ওঠা রসায়নটাই তাদের এগিয়ে দেয় অনেকখানি।

কিংসের কোচ মাহমুদা শরিফা অদিতির মতে, ‘এই ফুটবলাদের পরিণত হওয়াতেও বসুন্ধরা কিংসের মত পেশাদার একটা ক্লাবের বড় অবদান। বাফুফেতে একটা একাডেমির ফুটবলারের মত করে তারা গড়ে উঠেছে। কিন্তু কিংসে এসে তারা শিখেছে নিজেদের আলাদাভাবে কিভাবে আরও প্রকাশ করা যায় সেটি। এখানে এসে তাদের আত্মবিশ্বাস বেড়েছে। নিজেকে মূল্যায়ণ করতে শিখেছে আরও বেশি। মাঠে সেই ছাপটা আমরা দেখেছি এবারের সাফে।’

কিংসের হয়ে গত দুটি লিগেই সাবিনা, কৃষ্ণারা প্রতিপক্ষ হিসেবে যাঁদেরই সামনে পেয়েছে রীতিমতো বিদ্ধস্ত করেছে। নারী লিগে বাকি দলগুলোর মান তেমন না হলেও কিংস তাদের পেশাদারিত্বের কারণেই নিজেদের খেলার মানে যে এতটুকু ছাড় দেয়নি, স্কোরলাইনে সেই ছাপ। কিংসের টেকনিক্যাল ডিরেক্টর বিএ জুবায়ের নিপু এই খেলোয়াড়দের দুটি বছর খুব কাছ থেকে দেখেছেন। ক্লাব ফুটবলে তাঁরা যে আর্থিক স্বচ্ছলতার মুখ দেখেছেন, সেটাকেও তিনি সামনে আনতে চান।

জুবায়ের নিপু বলেন, ‘বসুন্ধরা কিংসে যোগ দিয়ে প্রতিটা মেয়ে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছে, স্বচ্ছ¡ল হয়েছে। এটা নিশ্চিতভাবেই ওদের পারফরম্যান্সে প্রভাব ফেলেছে। ছেলেদেরকে আমরা যেভাবে যত্ন নিয়েছি, তার চেয়ে কোনো কিছুতে কম করিনি মেয়েদের বেলায়। তাতে ওরা ওদের অবস্থানটা আরও ভাল করে বুঝতে পেরেছে। ভালো করার জন্য নিজেদের মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের পাশাপাশি ক্লাব হিসেবে বসুন্ধরা কিংসও তাই এই সাফল্যে নিজেদের অংশীদার ভাবতেই পারে।’

মেয়েরা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নাম কুড়ানো শুরু করলেও দেশের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবগুলোর মেয়েদের দল গড়তে অনেকটাই অনীহা। গত দুটি বছর প্রিমিয়ার লিগের একমাত্র বসুন্ধরা কিংসই মেয়েদের লিগে নাম লিখিয়েছে। এমনকি এ বছরও কিংস ছাড়া আর কোনো ক্লাব আগ্রহ দেখায়নি।