দুই বিভাগে গ্রামাঞ্চলের ১৪% মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত

শহরে এই হার আরও বেশি

জাতীয় ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস আজ। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য— “ডায়াবেটিস প্রতিরোধের এখনই সময়”। একইসঙ্গে বাংলাদেশে ডায়াবেটিক সমিতির ৬৮তম প্রতিষ্ঠা দিবস আজ।

বুধবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) দিবসটি উপলক্ষে ডায়াবেটিক সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন দিনব্যাপী নানা কর্মসূচি পালন করছে।

এদিকে ডায়াবেটিস সচেতনতা দিবস উপলক্ষে এক প্রতিবেদনে একটি সাম্প্রতিক সমীক্ষার তথ্য তুলে ধরেছে সংবাদমাধ্যম সমকাল।

সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চ, ডায়াবেটিক অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ ও স্বাস্থ্য সেবা অধিদপ্তরের অসংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা পরিচালিত ওই সমীক্ষা বলা হয়েছে, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগে গ্রামাঞ্চলের ১৪% মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, শহরে এই হার আরও বেশি। এই আক্রান্তদের মধ্যে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান ২৬%। ২০২২ সালের আগস্ট থেকে ২০২৩ সালে আগস্ট পর্যন্ত ঢাকা ও ময়মনসিংহের আট উপজেলায় সমীক্ষাটি চালানো হয়। ২৫ থেকে ৬৫ বছর বয়সী ১১ হাজার মানুষের ওপর সমীক্ষাটি চালানো হয়।

সমীক্ষায় দেখা গেছে, এ দুই বিভাগে ৭০% মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্তের ঝুঁকিতে রয়েছেন। আর গ্রামের ১৪% মানুষ এরই মধ্যে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়েছেন। শহরে বসবাসকারীদের মধ্যে আক্রান্তের হার আরও বেশি বলে সমীক্ষা প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

সমীক্ষা অনুযায়ী, এই দুই বিভাগে ডায়াবেটিস আক্রান্ত বলে শনাক্তদের  ৩৩.২% এর 0বয়স ২৫ থেকে ৩৫ বছর, ২৫.৬% এর বয়স ৩৬ থেকে ৪৫ বছর, ২১.৫% এর ৪৬ থেকে ৫৫ বছর, ১৯.৭% এর বয়স ৫৬ থেকে ৬৫ বছর। সমীক্ষায় অন্তর্ভুক্ত প্রায় ২৯.৯% তামাক সেবন করেন। কায়িক পরিশ্রম করেন না ৬৭%। দৈনিক পাঁচ প্রকার শাকসবজি ও ফলমূল খান না ৯৮.৯%%। ২০.৬% পারিবারিক ডায়াবেটিসের ইতিহাস আছে।

এ বিষয়ে সেন্টার ফর গ্লোবাল হেলথ রিসার্চের প্রকল্প পরিচালক ডা. বিশ্বজিত ভৌমিক সমকালকে বলেন, “ডায়াবেটিস আক্রান্তদের মধ্যে গবেষণা চালিয়ে দেখেছি মাত্র ২০% এর মধ্যে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। এটি শুধু বাংলাদেশে নয়, পার্শ্ববর্তী অনেক দেশেও ২০-২৫% মানুষ রোগটি নিয়ন্ত্রণ করতে পারছেন।”

বারডেম জেনারেল হাসপাতালের পরিচালক (একাডেমি) অধ্যাপক মো. ফারুক পাঠান সমকালকে বলেন, “পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, ১০ বছরের বেশি সময় ধরে যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের মধ্যে ৩০-৪০% হৃদরোগ, ৩৫% কিডনিজনিত ও চোখের সমস্যায় ভুগছেন। এসব জটিলতার কারণে রোগীর ব্যয় বেড়ে যায় এবং একসময় মৃত্যু হয়।”

তিনি আরও বলেন, “চর্বিযুক্ত খাদ্যাভ্যাসের কারণে ডায়াবেটিস ঝুঁকি বাড়ে ১১-২৬%, কায়িক পরিশ্রম না করলে ঝুঁকি বাড়ে ২০%। এছাড়া অতিরিক্ত শর্করা জাতীয় খাবারে ১৮-৪০% ও কোমল পানীয় পানে ২৬%।”

ছবি: পেক্সেলস