আঁধার চিরে ধরা দিল দূরতম ছায়াপথ, চোখ মেলেই চমকে দিল জেমস টেলিস্কোপ – Ekush.Info

বিশ্বলোকের ছবি তুলতে, আপন হতে বাহির হয়ে মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল সে। তবে থেকে অধীর অপেক্ষায় ছিল মানব সভ্যতা। আর চোখ মেলেই বিন্দুতে সিন্ধুদর্শন করাল জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। মানুষের চোখে ধরা দিল জ্ঞাতির দূরতম ছায়াপথ। তবে গবেষকরা বলছেন, এ তো সবে শুরু।

মঙ্গলবার জেমস ওয়েব টেলিস্কোপের তোলা বেশ কয়েকটি ছবি প্রকাশ করেছে নাসা। প্রতিটি ছবিই চমকে দিয়েছে মহাকাশজিজ্ঞাসুদের। যা এতদিন ছিল কল্পনায়, তা ই অবাক হয়ে অপলকে দেখছেন সবাই।

প্রকাশিত ছবির সঙ্গে নাসার তরফে প্রতিবেদনে লেখা হয়েছে, মহাকাশবিজ্ঞান চর্চার এক নতুন ভোরের সূচনা হল। জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ কী করতে পারে তা প্রথমবার প্রত্যক্ষ করল বিশ্ব। নাসার প্রকাশ করা প্রথম ছবিতে দেখা যাচ্ছে SMACS 0723 নামে একটি ছায়াপথপুঞ্জকে। চারিদিকে ছড়িয়ে রয়েছে অজস্র ছায়াপথ। পৃথিবী থেকে ৫১২ কোটি আলোকর্ষ দূরে অবস্থিত SMACS 0723 ছায়াপথপুঞ্জ। এর থেকে দূরতম মহাকাশের ছবি এখনো পর্যন্ত তুলতে পারেনি মানুষ।

তারাদের আঁতুড়ঘর ক্যারিনা নেবুলার একটি অংশের নিখুঁত ছবি প্রকাশ করেছে নাসা।

মহাকাশে চার ছায়াপথের সংসার স্টিফেন কুইনটেট-এরও ছবি তুলেছে জেমস টেলিস্কোপ। এটিই এখনো পর্যন্ত টেলিস্কোপটির তোলা সব থেকে বড় ছবি। যার প্রস্থ চাঁদের ব্যাসের পাঁচ ভাগের এক ভাগ।

পৃথিবী থেকে প্রায় ১৫ লক্ষ কিলোমিটার দূরে একটি শূন্য বিন্দুকে প্রদক্ষিণ করছে জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। ওই বিন্দুতে পৃথিবী ও সূর্যের মাধ্যাকর্ষণের মান সমান। যার ফলে পৃথিবীর কক্ষের বাইরে অবস্থিত হলেও একই কৌণিক গতিতে সূর্যকে প্রদক্ষিণ করতে জেমস ওয়েব টেলিস্কোপ। এর ফলে পৃথিবী থেকে সম্ভাব্য সব থেকে কম দূরত্বে অবস্থান করতে পারছে সে। যার জেরে দ্রুতগতিতে টেলিস্কোপটির সঙ্গে ডেটা আদানপ্রদান করতে পারছেন বিজ্ঞানীরা।

তবে শূন্য বিন্দুর চারিদিকে ঘুরতে ঘুরতে ক্রমশ পৃথিবীর দিকে সরে আসছে টেলিস্কোপটি। নাসার বিজ্ঞানীরা নির্দিষ্ট সময় অন্তর টেলিস্কোপটিতে আগে থেকে লাগানো রকেট জ্বালিয়ে আবার তাকে পুরনো কক্ষে ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। এভাবে ২০ বছর পর টেলিস্কোপটিতে মজুত সমস্ত জ্বালানি ফুরিয়ে যাবে বলে অনুমান। ততদিন তার চোখ মানুষকে অবাক করতে থাকবে সে।

মহাকাশ অভিযানের আদিকাল থেকে মানুষ যতটা অবাক হবে বলে যান পাঠিয়েছিল তার থেকে কয়েকগুণ বেশি রোমাঞ্চিত হয়েছে সে। তা সে ক্যাসিনি মিশন হোক বা নিউ হরাইজনস। মহাকাশ বারবার প্রমাণ করেছে সে মানব মস্তিষ্কের থেকেও বহুগুণ বেশি সৃজনশীল।