কাজের মাধ্যমে আস্থার প্রতিফলন দেখাতে চাই : জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল নিযুক্ত হওয়ার পর রাবাব ফাতিমা
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা বলেছেন, আমি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞ। আমার ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি হিসেবে তিনি আমাকে নিয়োগ দিয়েছেন। আমি জাতিসংঘের মহাসচিবের প্রতিও কৃতজ্ঞ। স্বল্পোন্নত দেশ, ভূবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের উচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ দিয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব আমার ওপর যে গভীর আস্থা ও বিশ্বাস স্থাপন করেছেন, আমি কাজের মাধ্যমে তার প্রতিফলন দেখাতে চাই। গত ৯ জুন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল এবং স্বল্পোন্নত দেশ, ভূবেষ্টিত উন্নয়নশীল দেশ ও উন্নয়নশীল ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্রসমূহের উচ্চ প্রতিনিধি হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। ওই দিন জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস উচ্চ পর্যায়ের এই নিয়োগের ঘোষণা দেন।
জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশন থেকে এক বার্তায় জানানো হয়, প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ ফরেন সার্ভিসের একজন নারী কূটনীতিক জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পেলেন। এই মুহূর্তে জাতিসংঘ সিস্টেমে একজন বাংলাদেশি নাগরিক হিসেবে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমাই হচ্ছেন সর্বোচ্চ পদে নিয়োগপ্রাপ্ত ব্যক্তি। জাতিসংঘের উচ্চ পর্যায়ে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার এই নিয়োগ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ ও বাংলাদেশি পেশাদার কূটনীতিকদের গ্রহণযোগ্যতারই বহিঃপ্রকাশ।
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক সিভিল সার্ভিসে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ৩০ বছরেরও বেশি সময়ের অভিজ্ঞতা, যেখানে তিনি দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক কূটনীতি, নীতি নির্ধারণ, অ্যাডভোকেসি, কর্মসূচি পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখেছেন। বর্তমানে তিনি জাতিসংঘ বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত রয়েছেন। এর আগে তিনি জাপানে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত (২০১৬-২০১৯) ছিলেন।
পেশাদার কূটনীতিক রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ১৯৮৯ সালে বাংলাদেশ পররাষ্ট্র সার্ভিসে যোগদান করেন। পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালকসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি তিনি নিউইয়র্ক ও জেনেভাস্থ জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এবং কলকাতা ও বেইজিংয়ে বাংলাদেশ দূতাবাসে দায়িত্ব পালন করেন।
মানবাধিকার বিষয়াবলিতে রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার রয়েছে ব্যাপক অভিজ্ঞতা। লন্ডনস্থ কমনওয়েলথ সেক্রেটারিয়েটে মানবাধিকার বিভাগের প্রধান, আন্তর্জাতিক অভিবাসন সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের আঞ্চলিক প্রতিনিধি এবং একই সংস্থার দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম এশিয়ার জলবায়ু পরিবর্তন ও অভিবাসন বিষয়ক আঞ্চলিক উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করার সুদীর্ঘ অভিজ্ঞতাও রয়েছে এই কূটনীতিকের। তিনি টাফ্টস ইউনিভার্সিটির ফ্লেচার স্কুল অব ল’ অ্যান্ড ডিপ্লোমেসি থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও কূটনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং অস্ট্রেলিয়ার ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সামাজিক বিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।