বিদেশে রফতানি করা পোশাক চুরি করে ১০০ কোটি টাকার বেশি মালিক! এমনকী নিজের দুই স্ত্রীকে কোটি টাকার বেশি মূল্যের দুই বিলাসবহুল বাংলো উপহার দিয়েছেন। চোর বাবাজীর এমন কাণ্ডে কার্যত চক্ষু ছানাবড়া র্যাবের গোয়েন্দাদের। শুক্রবার রাতেই মৌলভীবাজার, গোপালগঞ্জ ও ঢাকার বিভিন্ন এলাকায় বিশেষ অভিযান চালিয়ে ধনী চোর মোহাম্মদ সাহেদ ও তাঁর তিন সহযোগীকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
১কীভাবে বিপুল সম্পত্তির মালিক হলেন সাহেদ? র্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন শনিবার সাংবাদিক সম্মেলনে জানিয়েছেন, অসাধু গাড়ি চালক, খালাসি, গুদাম মালিক, চুরির মালামাল নামাতে দক্ষ কুলি সর্দারসহ একদল শ্রমিককে নিয়ে একটি চুরি চক্র গড়ে তুলেছিল সাহেদ। গত ২০ বছর ধরে ওই চক্রের সাহায্যে বিদেশে পোশাক রফতানিকারক সংস্থার পণ্য গায়েব করছিল। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কই তার অপারেশনের ক্ষেত্র। গত অক্টোবরে ব্রাজিলের একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য তৈরি করা পোশাক চট্টগ্রাম বন্দরে নেওয়ার পথে বিশেষ দাও মারে সাহেদ ও তার দলবল। মূলত সাহেদ পোশাক রফতানির সঙ্গে জড়িত ট্রাক চালক ও খালাসিদের সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে তুলে অর্থের প্রলোভন দেখিয়ে রফতানির পণ্য চুরির কাজে উৎসাহিত করতেন। প্রতিটি চুরিতে তাঁদের লক্ষ্য থাকত ১০ থেকে ১২ লাখ টাকার পোশাক। একটি চুরির পর চালককে ৩০ হাজার, তাঁর সহকারীকে ২০ হাজার, গুদামের মালিককে ৫০ হাজার, গুদাম এলাকায় এই চক্রের আশ্রয়দাতাকে ৬০ হাজার টাকা দেওয়া হতো।
র্যাব মুখপাত্র জানান, গত ২০ বছরে চুরির মাধ্যমে একশো কোটি টাকার বেশি সম্পত্তি করেছেন সাহেদ। চুরির টাকায় মৌলভীবাজারের দুর্লভপুরে দুটি বিলাসবহুল বাড়ি তৈরি করেছেন। তার একটি ২০ একর জমি নিয়ে। তাঁর এই বাগান বাড়ি ট্রিপ্লেক্স ঘর, একটি মাছের খামার ও দুটি হাঁস–মুরগির খামার রয়েছে। এই বাড়িতে সাহেদের ছোট স্ত্রী থাকেন। বাড়িটি তৈরিতে সাহেদ ১৫ কোটির বেশি টাকা ব্যয় করেছেন। পাশাপাশি দুর্লভপুর গ্রামেই আরেকটি ডুপ্লেক্স বাড়ি করেছেন সাহেদ। ওই বাড়িতে তাঁর বড় স্ত্রী থাকেন। এ ছাড়া নামে-বেনামে সাহেদের অন্তত ২০টি কাভার্ডভ্যান রয়েছে।