ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক বিধিগুলো সাইবার নিরাপত্তা আইনে রয়েছে: অ্যামনেস্টির পর্যালোচনা – Ekush.Info

সাইবার নিরাপত্তা আইনে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক বিধিগুলো রয়ে গেছে। সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়া পর্যালোচনা করে এমন মন্তব্য করেছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল।

‘বাংলাদেশ: সরকারকে খোলা চিঠি, প্রস্তাবিত সাইবার নিরাপত্তা আইনের প্রতিক্রিয়া’ শীর্ষক ২৫ পৃষ্ঠার পর্যালোচনা মঙ্গলবার অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের ওয়েবসাইটে প্রকাশ করা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, প্রাথমিকভাবে আইনটির খসড়া পর্যালোচনা করে সংস্থাটির মনে হয়েছে, এতে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের দমনমূলক বিধিগুলো রয়ে গেছে। এই ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাংলাদেশে মতপ্রকাশের স্বাধীনতার অধিকারকে বিপন্ন ও সীমিত করার জন্য ব্যবহার করা হতো।

সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৬ নম্বর অনুচ্ছেদের উল্লেখ করে সংস্থাটি বলছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের সঙ্গে তুলনায় দেখা যাচ্ছে, এই অনুচ্ছেদে একটি ছাড়া সব অপরাধের বিষয় একই আছে। এ ক্ষেত্রে শুধু একটি পরিবর্তন আনা হয়েছে। এই পরিবর্তনও অপরাধের ধরনে নয়, শাস্তির ক্ষেত্রে। সংস্থাটি বলেছে, আটটি অপরাধের সর্বোচ্চ শাস্তি কমানো হয়েছে, দুটি অপরাধের ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের শাস্তি বাদ দেওয়া হয়েছে, তিনটি অপরাধের সর্বোচ্চ অর্থদণ্ড বাড়ানো হয়েছে এবং একই অপরাধ পরেও করলে বাড়তি সাজা বাতিল করা হয়েছে।

অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল তাদের পর্যালোচনায় বলেছে, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের ধারা ২৫ (মিথ্যা বা আপত্তিকর তথ্য প্রকাশ), ধারা ২৯ (মানহানিকর তথ্য প্রকাশ) এবং ধারা ৩১ (আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর শাস্তি) সাইবার নিরাপত্তা আইনের খসড়ায় অবিকৃত রয়েছে।

খসড়া সাইবার নিরাপত্তা আইনের ২৫ ধারায় ‘রাষ্ট্রের ভাবমূর্তি ও সুনাম ক্ষুণ্ন’ করার মতো বিষয়ের কোনো ব্যাখ্যা না থাকার বিষয়টিও উল্লেখ করেছে সংস্থাটি। এ ছাড়া ২৯ ধারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো রয়েছে। শুধু এ ক্ষেত্রে কারাদণ্ডের বদলে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে।

সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৩১ ধারায় বলা হয়েছে, যদি কোনো ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে ওয়েবসাইট বা ডিজিটাল বিন্যাসে এমন কিছু প্রকাশ বা সম্প্রচার করেন বা করান, যা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন শ্রেণি বা সম্প্রদায়ের মধ্যে শত্রুতা, ঘৃণা বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করে বা সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্ট করে বা অস্থিরতা বা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে অথবা আইনশৃঙ্খলার অবনতি ঘটায় বা ঘটার উপক্রম হয়, তাহলে ওই ব্যক্তির অনধিক সাত বছর কারাদণ্ড, বা অনধিক পাঁচ লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবেন। অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল বলেছে, এ ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা না থাকায় এই ধারার অপপ্রয়োগের ঝুঁকি থাকছে।