হিরো আলম প্রসংগ: সংসদকে ছোট করতে হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে বিএনপি: ওবায়দুল কাদের – Ekush.Info

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ফখরুল সাহেব বললেন, রাষ্ট্রযন্ত্র ব্যবহার করে হিরো আলমকে হারানো হয়েছে। হায়রে মায়া! হিরো আলমের জন্য এতো দরদ উঠলো তার। তিনি ভেবেছিলেন, হিরো আলম জিতে যাবে। কিন্তু হিরো আলম এখন জিরো হয়ে গেছে। হিরো আলমকে বিএনপি নির্বাচনে দাঁড় করিয়েছে। তারা সংসদকে ছোট করার জন্য হিরো আলমকে প্রার্থী করেছে। অবশেষে ফখরুলের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে।’

শনিবার ৪ ফেব্রুয়ারী বিকেলে কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট সরকারি হাসপাতাল মাঠে বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ, নৈরাজ্য, অপরাজনীতি ও দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ আয়োজিত শান্তি সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।

আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘ফখরুল সাহেব, পাকিস্তান আমল তো ভালো, এখন পাকিস্তানের কী অবস্থা? বাংলাদেশের ছয় মাস আমদানি করার রিজার্ভ আছে। পাকিস্তানে তিন সপ্তাহের রিজার্ভও নেই। আজকে ক্ষুধায় সমস্ত পাকিস্তান কাঁপছে। সেই পাকিস্তান আপনার ভালো লাগে। শেখ হাসিনা নেতৃত্বে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবে। কিন্তু আপনারা যদি ক্ষমতায় যান বাংলাদেশ আজকের পাকিস্তান হবে। ফখরুল সাহেবরা বাংলাদেশকে পেয়ারের পাকিস্তান বানাবে আমরা সেটা হতে দেব না।’

হিরো আলম নাম নিয়ে অহেতুক বিতর্কে যেতে চাই না’

৫ ফেব্রুয়ারি রোববার দুপুরে সচিবালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে সমসাময়িক বিষয়ে আলাপকালে হিরো আলমের অভিযোগ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন,

– ‘এই নাম নিয়ে অহেতুক আর বিতর্কে আমি যেতে চাই না।’

মানুষ ভোট দেওয়ার আগ্রহ কেন হারিয়ে ফেলছে, এটা গণতন্ত্রের জন্য কতটা সুখকর জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘সত্যি বলছি কি না মিলিয়ে দেখুন, পৃথিবীর সব দেশে উপনির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কম থাকে। এটা দিয়ে খুব বেশি লাভ-ক্ষতি কেউ খুঁজে পায় না।

হিরো আলম অভিযোগ করেছেন, সরকার ষড়যন্ত্র করে তাকে হারিয়েছে এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইতে তিনি বলেন, ‘কোন এলাকায় কত ভোট পড়েছে আমি বলেছি। এটাও বলেছি, উপনির্বাচনে মানুষের আগ্রহ কম থাকে। তারপরও গাইবান্ধায় ৩৮ শতাংশ ভোট পড়েছে; কম না। ঠাকুরগাঁওয়ে ৪৫ শতাংশ ভোট পড়েছে। সেখানে ওয়ার্কার্স পার্টির প্রার্থী ছিল। বগুড়ায় যার কথা বলছেন, এই নাম নিয়ে অহেতুক আর বিতর্কে আমি যেতে চাই না।’

অন্যদিকে বগুড়া-৪ (কাহালু ও নন্দীগ্রাম উপজেলা) উপনির্বাচনে ভোট পুনরায় গণনার জন্য আবেদন করেছেন আশরাফুল হোসেন ওরফে হিরো আলম। আজ রোববার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে তিনি ভোট পুনরায় গণনার আবেদন জমা দেন।

আবেদন জমা দেওয়ার পর হিরো আলম বলেন, ‘বগুড়া ৪ আসনের নির্বাচনী ফল নিয়ে আমার সন্দেহ আছে। সবগুলো ভোটকেন্দ্রের ফলাফল আমি জোগাড় করেছি। কিছু কেন্দ্রে আমিসহ প্রায় সব প্রার্থী অস্বাভাবিক ভোট পেয়েছে। ওই কেন্দ্রগুলো উল্লেখ করে আমি জেলা প্রশাসকের কাছে ভোট পুনরায় গণনার আবেদন করেছি। তারা আমার আবেদন গ্রহণ করেছে। তবে কবে ফল গণনা করবে সেই বিষয়ে কিছু জানায়নি। যদি তারা সাড়া না দেয় আমি হাইকোর্টে যাব।’

হিরো আলম আরও বলেন, ‘আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই যেখানে সব দল অংশগ্রহণ করবে। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে।’

ওবায়দুল কাদেরের সঙ্গে ভোটের মাঠে খেলতে চান হিরো আলম

বিএনপি হিরো আলমের পক্ষে কাজ করছে কিনা গণমাধ্যমের এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘বিএনপি আমার পক্ষে কাজ করলে নির্বাচনের দিন তারা মাঠেই থাকতো। বিএনপির কোনো লোক আমার সঙ্গে ছিল না। এসব কিছু লোকের বানানো কথা। শুধু বিএনপির মির্জা ফখরুল স্যার নয়, সারা বাংলাদেশ আমার পক্ষে কথা বলেছে।  

হিরো আলম আরও বলেন, ‘সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের স্যার বলেছেন, হিরো আলম জিরো হয়ে গেছেন। হিরো আলম কখনও জিরো হয়নি। যারা তাকে জিরো বানাতে চান তারাই জিরো হয়ে গেছেন। সেতুমন্ত্রী আমাকে তাচ্ছিল্য করে কথা বলছেন। তবে একজন মন্ত্রী দেশের নাগরিককে তাচ্ছিল্য করে কথা বলতে পারেন না। তিনি কথায় কথায় বলেন ‘আসুন খেলা হবে’, শক্তিশালী দলের সঙ্গে খেলতে চান।

ভোট করার বিষয়ে হিরো আলম বলেন, আমি ওবায়দুল কাদের স্যারকে জোর গলায় বলতে চাই, খেলা সবার সঙ্গে করতে হবে না।  আমার (হিরো আলম) সঙ্গে একটা নির্বাচনে আপনি প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। আমি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে ও আপনি দলীয়ভাবে দাঁড়ান। এরপর আপনি সুষ্ঠু নির্বাচন দিয়ে দেখেন খেলা হয় কিনা।  খেলার জন্য নাকি উনি মাঠে প্লেয়ার খুঁজে পান না।  আমার সঙ্গে কেন্দ্রে সিসিক্যামেরা দিয়ে ভোটারদের ভয় না দেখিয়ে সুষ্ঠু ভোট দিয়ে দেখেন। উনি কেন আমাকে ছোট করে কথা বলেন। উনাকে বলবো বগুড়া-৪ (কাহালু-নন্দীগ্রাম) থেকে ভোট করুন আমাকে যেই আসন থেকে পরাজিত করে দেওয়া হয়েছে।  

হিরো আলম আরও বলেন, ‌‘আমি সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। আগামীতে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন চাই, যেখানে সব দল অংশ নেবে। সবাই নির্বিঘ্নে ভোট দিতে পারবে। ’

১ ফেব্রুয়ারি বগুড়া-৪ এবং বগুড়া-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন হিরো আলম। বগুড়া-৪ আসনে আওয়ামী লীগ সমর্থিত জাসদ প্রার্থীর কাছে ৮৩৪ ভোটে হেরে যান তিনি। এরপরেই হিরো আলম অভিযোগ করেন যে, এই আসনে ভোট সুষ্ঠু হলেও গণনার সময় ফলাফল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। ষড়যন্ত্র করে তাকে হারিয়ে দেওয়া হয়েছে।