আমাদের সময় ২০ অক্টোবর ২০২৫ , ১২:১৭:৫১
এল আর বাদল : সরকারী পরিসংখ্যান প্রমাণ করছেক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইসরাইলকে কমপক্ষে ১৭.৯ বিলিয়ন ডলার প্রত্যক্ষ সামরিক সহায়তা বরাদ্দ করেছে। তার মানে আমেরিকা গাজা যুদ্ধের কেবল সমর্থকই নয় বরং গাজায় অপরাধের একটি প্রধান অংশীদারও।
মুক্ত গবেষণা কেন্দ্রগুলোর এক প্রতিবেদন অনুসারে, ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের শেষ পর্যন্ত, ইসরাইলকে মার্কিন সামরিক সহায়তা ১৭.৯ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে এবং পরোক্ষ সহায়তাসহ এই সংখ্যা ৩০ বিলিয়ন ডলারেরও বেশি হবে। এই সহায়তার অর্থ মূলত লকহিড মার্টিন এবং বোয়িংয়ের মতো আমেরিকার কোম্পানিগুলোর কাছ থেকে অস্ত্র কেনার জন্য ব্যয় করা হয়। এর মাধ্যমে দেশটির সামরিক শিল্পের জন্য একটি লাভজনক চক্র তৈরি হয়েছে।
মেহর নিউজ এজেন্সির বরাত দিয়ে পার্সটুডে আরও জানায়, আমেরিকার প্রতিটি নাগরিক গাজা যুদ্ধের জন্য গড়ে ৮৫ থেকে ১৬৫ ডলার প্রদান করেছেন, যখন অনেক রাজ্য স্বাস্থ্য ও শিক্ষার ক্ষেত্রে গুরুতর সংকটের মুখোমুখি হচ্ছে। এই বাজেট দিয়ে আমেরিকার ৬০ লক্ষ শিশুর জন্য স্বাস্থ্য বীমা প্রদান করতে পারা যেত কিংবা লক্ষ লক্ষ নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেওয়া যেত।
আমেরিকার জনমত পরিবর্তিত হচ্ছে বিশেষ করে ১৮ থেকে ২৯ বছর বয়সী তরুণদের মধ্যে। জরিপগুলোতে দেখা যায় এই বয়সের বেশিরভাগ মানুষ ইসরাইলকে সামরিক সাহায্যের বিরোধিতা করে। এমনকি আমেরিকার ইহুদি সম্প্রদায়ও সমালোচনায় মুখর। এমনকি তারা ‘ইহুদিদের জন্য শান্তি’ আন্দোলনগুলোও এই সাহায্য বন্ধ করার আহ্বান জানিয়েছে।
অবশ্য AIPAC-এর মতো শক্তিশালী লবি এবং কংগ্রেসে আধিপত্য বিস্তারকারী দ্বিদলীয় কাঠামোর প্রভাব এই নীতিগুলোকে পরিবর্তন করতে বাধা দিয়েছে। ওবামার ১০ বছরের চুক্তি, যা ইসরাইলকে বার্ষিক ৩.৮ বিলিয়ন ডলার সামরিক সাহায্য বরাদ্দ করে, ২০২৮ সাল পর্যন্ত চলবে।
এই তথ্যগুলো প্রমাণ করে গাজায় আমেরিকার শান্তি মধ্যস্থতার দাবির আড়ালে রয়েছে তার অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থ । যতক্ষণ পর্যন্ত যুদ্ধের এই লাভজনক চক্র চলতে থাকবে ততক্ষণ পর্যন্ত মধ্যপ্রাচ্যে শান্তির কথা নিরর্থকই থেকে যাবে।