৪ প্রযুক্তির বিকাশ-সক্ষমতা বাড়াতে এখনই কাজ শুরু করতে হবে: জয়

প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয় বলেছেন, ‘উন্নত, সমৃদ্ধ ও আত্মনির্ভরশীল বাংলাদেশের ভবিষ্যতের জন্য আমরা চারটি প্রযুক্তির ওপর নজর দিতে চাই। সেগুলো হলো- মাইক্রোপ্রসেসর ডিজাইন, আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স, রোবটিকস এবং সাইবার সিকিউরিটি। এই চার প্রযুক্তির বিকাশ ও সক্ষমতা বাড়াতে আমাদের এখন থেকেই কাজ শুরু করতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘এ চার প্রযুক্তিতে বাংলাদেশ আত্মনির্ভরশীল হতে কাজ শুরু করেছে। এক্ষেত্রে শুধুমাত্র মাইক্রো প্রসেসর ডিজাইনে অন্যান্য দেশকে ধরতে বাংলাদেশের একটু সময় লাগবে। অন্য তিনটিতে বাংলাদেশ বিশ্বের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করতে সক্ষম।’

আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়‌ বুধবার (৬ জুলাই) বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের বোর্ড অব গভর্নরসের দ্বিতীয় সভায় এসব কথা বলেন। গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি তিনি সভায় ‍যুক্ত হন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। প্রধানমন্ত্রীও গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি অংশ নেন।

সজীব ওয়াজেদ জয় বলেন, ‘ইন্ডাস্ট্রি, ডিফেন্স টেকনোলজি, অ্যাগ্রিকালচারসহ ভবিষ্যৎ পৃথিবীর প্রত্যেকটা সেক্টর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও রোবটিকস নির্ভর হবে। তাই নিজেদের সক্ষমতা বাড়ানোর পাশাপাশি বিশ্ববাজারে রপ্তানি ও আত্মনির্ভরশীল হওয়ার জন্য এখন থেকেই আমাদের পরিকল্পনা ও কাজ করতে হবে।’

প্রধানমন্ত্রীর আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ‘ভবিষ্যতে কী ধরনের টেকনোলজি দেশের জন্য, বিশ্বের জন্য প্রয়োজন হবে, তা মাথায় রেখে সেই ক্ষেত্রে আমাদের আত্মনির্ভরশীল হওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। সেই লক্ষ্য নিয়েই মাইক্রো প্রসেসিং, আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স, রোবটিকস এবং সাইবার সুরক্ষায় আমরা সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিচ্ছি।

তিনি বলেন, ‘মাইক্রো প্রসেসিং ডিজাইন ও ম্যানুফ্যাকচারিংয়ে বর্তমানে পুরো বিশ্ব ২-৩টি দেশের ওপর নির্ভরশীল। ভবিষ্যত ডিজিটাল দুনিয়ার জন্য সব কিছুতেই আর্টিফিশিয়াল ইন্টিলিজেন্স কিছু না কিছু চলে আসছে। বর্তমানে আমাদের অন্য দেশ থেকে এ টেকনলোজি আনতে হচ্ছে। আমার ধারণা, ভবিষ্যতে সবক্ষেত্রেই রোবটিকসের ব্যবহার হবে। ইন্ডাস্ট্রির পাশাপাশি প্রতিরক্ষা, কৃষি সব ক্ষেত্রেই রোবট শ্রমবাজার টেকওভার করবে। আমরা যদি নিজেদের রোবটিক টেকনলোজি ডেভেলপ করতে পারি, তখন অন্যদের ওপর নির্ভরশীল হতে হবে না।’

জয় আরও বলেন, ‘অর্থনীতি যেহেতু ডিজিটাল হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে সাইবার সুরক্ষায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিতে হবে। যদিও আমাদের দেশে এ চারটি ক্ষেত্রে কিছু কিছু টেকনোলজি আবিষ্কার হচ্ছে। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অন্যদের ওপর নির্ভরশীল।’

এ নির্ভরশীলতা কাটাতে প্রয়োজনীয় এসব প্রযুক্তিতে তরুণদের এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়ে আইসিটি উপদেষ্টা বলেন, ‘আইওটি ও রোবটিকসে অন্যান্য দেশ খুব একটা এগিয়ে যেতে পারেনি। এটা নতুন প্রযুক্তি। আমরা সহজেই ধরে ফেলতে পারবো।’

তিনি আরও বলেন, ‘মাইক্রো প্রসেসরে যেসব দেশ এগিয়ে গেছে, তাদের ধরতে আরও ২০ বছর সময় লাগতে পারে। তবুও আমাদের আজ থেকেই কাজ শুরু করতে হবে। ভবিষ্যতের মাইক্রো প্রসেসর টেকনোলজিতেও আশা করি আমরা এগিয়ে যেতে পারবো।’

সভায় আরও বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এতে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার, শিল্পমন্ত্রী নুরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ুন, পরিবেশ বন ও জলবায়ু বিষয়কমন্ত্রী শাহাব উদ্দিন ও ভূমিমন্ত্রী সাঈফুজ্জামান চৌধুরী প্রমুখ।

এছাড়া বোর্ড অব গভর্নরসের সদস্যরা, বিসিএস, বেসিস ও বাক্কো সভাপতি, আইসিটি বিভাগ, বাংলাদেশ হাইটেক পার্ক কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এ সভায় অংশ নেন। সভাটি পরিচালনা করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের সিনিয়র সচিব এন এম জিয়াউল আলম।