যারা প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোনের পেছনে ব্যয় করে, তাদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন, প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাদের উচিত ফোন হাত থেকে নামিয়ে রেখে জীবনটাকে একটু উপভোগ করা।

মোবাইল ফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার কমিয়ে জীবন উপভোগের পরামর্শ দিয়েছেন খোদ ফোনের আবিষ্কারক মার্টিন কুপার।

বর্তমানে ৯৩ বছর বয়সি মার্টিন কুপার ১৯৭৩ সালে বিশ্বের প্রথম ওয়্যারলেস সেলুলার ডিভাইস—মটোরোলা ডায়নাটিএসি ৮০০০এক্স—তৈরি করেন। তবে তার প্রায় ৫০ বছর পর এই প্রকৌশলীর মনে হচ্ছে ফোনের পেছনে মানুষের আরও কম সময় দেওয়া উচিত।

সম্প্রতি বিবিসি ব্রেকফাস্ট-এ আলাপকালে কুপার স্বীকার করেন যে, তিনি নিজের সময়ের ‘পাঁচ শতাংশের’ও কম সময় ব্যয় করেন মোবাইলে।

যারা প্রতিদিন ঘণ্টার পর ঘণ্টা মোবাইল ফোনের পেছনে ব্যয় করে, তাদের জন্য কী পরামর্শ দেবেন, প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, তাদের উচিত ফোন হাত থেকে নামিয়ে রেখে জীবনটাকে একটু উপভোগ করা।

সাক্ষাৎকার গ্রহণকারী জেইন ম্যাককাবিন তাকে প্রশ্ন করেন, ‘আমার মতো যারা দিনে পাঁচ ঘণ্টা পর্যন্ত ফোন ব্যবহার করে, তাদের কী বলবেন?’

‘সত্যিই? সত্যিই আপনি দিনে পাঁচ ঘণ্টা সময় দেন [মোবাইলের পেছনে]?’ কুপার বিস্ময় প্রকাশ করেন। তারপর একগাল হেসে বলেন, ‘জীবনটাকে একটু উপভোগ করুন।’

১৯৫০ সালে ইলিনয় ইন্সটিটিউট অভ টেকনোলজি থেকে স্নাতক সম্পন্ন করে ইলেক্ট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। ১৯৫৪ সালে তিনি মটোরোলায় যোগ দেন।

তারপর ১৯৭৩ সালে কুপার আবিষ্কার করেন বিশ্বের প্রথম মোবাইল ফোন। তারপর তিনি ওই ফোন দিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী জোয়েল এঙ্গেলকে কল করেন। এঙ্গেল ছিলেন এটিঅ্যান্ডটি-র প্রধান ইঞ্জিনিয়ার।

ওই ঘটনার স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে কুপার বলেন, ‘ফোন করে বললাম, “জোয়েল, তোমাকে আমি একটা সেলফোন থেকে কল করেছি, সত্যিকারের সেলফোন—একটা ব্যক্তিগত, হাতেধরার পোর্টেবল সেলফোন।” অপরপ্রান্তে ছিল শুধুই নীরবতা।’

প্রথম মোবাইল ফোনের ব্যাটারিতে একবার চার্জ দিলে ২৫ মিনিট চলত। আর ফুল চার্জ হতে সময় লাগত ১০ ঘণ্টা। ১০ ইঞ্চি লম্বা ওই ফোনের ওজন ছিল আড়াই পাউন্ড।

সম্প্রতি (২০২১ সালে) ‘কাটিং দ্য কর্ড’ নামে স্মৃতিকথা প্রকাশ করেছেন মার্টিন কুপার। বইটিকে চলচ্চিত্রে রূপ দেওয়া নিয়েও আলোচনা চলছে।

সূত্র: ডেইলি মেইল