প্রতিবেদনটি জানায়, বিশ্বের ২০টি অটেকসই মেগাসিটির মধ্যে ৮টিই অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ায়। এগুলি হলো– ঢাকা, লাহোর, কোলকাতা, দিল্লি, করাচি, মুম্বাই, হায়দেরাবাদ ও চেন্নাই।

বিশ্বের সবচেয়ে অটেকসই মেগাসিটির র‍্যাঙ্কিংয়ে ৪র্থ ঢাকা:

বিশ্বের সবচেয়ে অটেকসই ২০টি মহানগরের মধ্যে ৪র্থ অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী।

আজ বুধবার প্রকাশিত ২০২২ সালের ‘ইকোলজিক্যাল থ্রেট রিপোর্ট (ইটিআর)’ শীর্ষক এক প্রতিবেদনে একথা জানানো হয়েছে।

প্রতিবেদনটি জানায়, বিশ্বের ২০টি অটেকসই মেগাসিটির মধ্যে ৮টিই অবস্থিত দক্ষিণ এশিয়ায়। এগুলি হলো– ঢাকা, লাহোর, কোলকাতা, দিল্লি, করাচি, মুম্বাই, হায়দেরাবাদ ও চেন্নাই।

বাগদাদ, লাহোর, কোলকাতা ও দিল্লিসহ এসব শহরের জনসংখ্যা ২০৫০ সাল নাগাদ ৫০ শতাংশের বেশি বাড়বে, যা খুবই উচ্চ।

মেগাসিটিগুলোয় বায়ুদূষণ, দুর্বল পয়নিস্কাশন ব্যবস্থার সমস্যা ব্যাপক হয়ে উঠবে। সেই সাথে বাড়বে হত্যা-রাহাজানি এবং পরিবেশগত ঝুঁকি।

সিডনি-ভিত্তিক চিন্তক সংস্থা– ইনস্টিটিউট ফর ইকোনমিক্স অ্যান্ড পিস (আইইপি) প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। এর মৌলিক তথ্যাবলী নেওয়া হয়েছে লয়েডস রেজিস্টার ফাউন্ডেশনের ‘ওয়ার্ল্ড রিস্ক পোল’ শীর্ষক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে।

ওই গবেষণায় পরিবেশগত বিপর্যয়ের ঝুঁকি, সামাজিক অদম্যতা এবং শান্তি-স্থিতিশীলতার বিশ্লেষণ করা হয় ২২৮টি দেশ ও অঞ্চলের। এর আওতায় ছিল ৩ হাজার ৬৩৮টি প্রশাসনিক জেলা এবং ২৫০টি শহর। বর্তমান সময়ের এবং ২০৫০ সাল নাগাদ উদ্ভূত পরিবেশগত ও সামাজিক নানান সমস্যা মোকাবিলায় শহরগুলির সক্ষমতা নিরুপণ করা হয়।

গবেষণাটি জানিয়েছে, বর্তমানে ৩৩টি মেগাসিটি রয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ যা হতে পারে ৪৭টি।

বিশ্বের দ্রুতবর্ধনশীল শহরের মধ্যে অন্যতম ঢাকা। ১৯৯০ থেকে ২০০৫ সালের মধ্যে এ নগরীর অধিবাসীর সংখ্যা ৬০ লাখ থেকে দ্বিগুণ বেড়ে ১ কোটি ২০ লাখ হয়েছে।

ঢাকার জনসংখ্যা আরও বাড়বে বলেই জানিয়েছে ‘ইকোলজিক্যাল থ্রেট রিপোর্ট’। বর্তমানের ২ কোটি ২৬ লাখের তুলনায় ৫৩ শতাংশ বেড়ে ২০৫০ সাল নাগাদ তা ৩ কোটি ৪৬ লাখ হবে বলে এতে উল্লেখ করা হয়।

ঢাকা বাংলাদেশের অর্থনীতির এক-পঞ্চমাংশ অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে অবদান রাখে। কিন্তু, অপরিকল্পিত নগরায়ন ও দূষণের ফলে বিভিন্ন পরিবেশগত সমস্যায় ভুগছে এ মহানগরী।

প্রতিবেদনটি জানায়, মাত্র ৩৬০ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে গড়ে উঠেছে ঢাকা শহর। সে তুলনায় জনসংখ্যা ঘনত্ব অতি-বেশি, বা প্রতি বর্গকিলোমিটারে ২৯ হাজার জন।

‘উচ্চ জনসংখ্যা ঘনত্বের সাথে সাথে দ্রুত নগরায়ন হতে থাকায় অনেক এলাকায় পৌঁছায়নি পাইপের মাধ্যমে পানি সরবরাহের সুবিধা। বর্তমানে ঢাকাবাসী এক-তৃতীয়াংশ মানুষ এ সুবিধা পাচ্ছে না। অনেককে থাকতে হচ্ছে বস্তির মতো অনুনোমোদিত এলাকায়। এরমধ্যে অন্যতম একটি হলো কড়াইল বস্তি। ২০১১ সালে সেখানে ৪০ হাজার জন বাস করলেও এখন থাকে প্রায় দেড় লাখ’।

‘নিয়মিত বন্যাতেও প্লাবিত হচ্ছে ঢাকা। আগামী দিনগুলোয় বন্যার প্রকোপ আরও বাড়বে। অপেক্ষাকৃত নিম্ন-সমভূমিতে অবস্থিত হওয়ায় সাগরপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধিও ঢাকাকে প্রভাবিত করবে। এছাড়া, পরিবহন, পানি সরবরাহ, বর্জ্য ব্যবস্থাপনা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানির অবকাঠামোগত সমস্যাতেও ভুগতে হবে ঢাকাবাসীকে’।

এতে আরও বলা হয়, বিশেষত বর্জ্য ব্যবস্থাপনা সঠিকভাবে করতে না পারায় ঢাকা নগর কর্তৃপক্ষ শহরবাসীকে বসবাসের উত্তম পরিবেশ দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। শহরে দৈনিক ৫ হাজার টন বর্জ্য তৈরি হলেও, এরমধ্যে কেবল অর্ধেকই সংগ্রহ করে ভাগাড়ে নিয়ে ফেলা হয়।