লাইসেন্স ছাড়া ওষুধ উৎপাদন-বিপণন এবং সরকারি ওষুধ চুরি করে বিক্রি করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদণ্ড ও ১০ লাখ টাকা জরিমানার বিধান রেখে ঔষধ আইন-২০২২-এর খসড়ার নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।

সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে বৃহস্পতিবার হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। এতে গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের লাইসেন্স ছাড়া বাণিজ্যিকভাবে ওষুধ উৎপাদন বা আমদানি করলে সর্বোচ্চ ১০ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডের বিধান আসছে। এ ছাড়া জনসাধারণের চলাচলের পথ, মহাসড়ক কিংবা ফুটপাতে ওষুধ বিক্রিও নিষিদ্ধ হচ্ছে। এসব নিয়ে প্রণীত ঔষধ আইন ২০২১-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদনের জন্য আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রিসভায় উঠছে। মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিলে তা ভেটিংয়ের জন্য আইন মন্ত্রণালয়ে যাবে। তার পর সংসদে পাস হলেই আইনটি কার্যকর হবে। আজ বেলা ১১ টায় প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, ঔষধ আইনের গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যক্তি লাইসেন্সিং কর্তৃপক্ষের প্রদত্ত লাইসেন্স ছাড়া অথবা লাইসেন্স আরোপিত শর্তবহির্ভূতভাবে ওষুধ মজুদ, প্রদর্শন, বিক্রি, বিতরণের ক্ষেত্রে ইন্টারনেট অথবা ওয়েবভিত্তিক প্রক্রিয়া ব্যবহার করতে পারবেন না। যদি কোনো ব্যক্তি এ বিধান লঙ্ঘন করে তা হলে সর্বোচ্চ ৫ বছরের কারাদণ্ড অথবা ৫ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে-দণ্ডিত হবেন।

যে কোনো ধরনের ওষুধ উৎপাদনে অবশ্যই ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তর থেকে লাইসেন্স নিতে হবে। এ ছাড়া সড়ক-মহাসড়ক, ফুটপাত, পার্ক, কিংবা গণপরিবহনে এলোপ্যাথিক, ইউনানি, আয়ুর্বেদিক, হোমিওপ্যাথিক, বায়োকেমিক, হারবাল অথবা অন্য কোনো প্রকারের ওষুধ ফেরি করে বিক্রি কিংবা বিনামূল্যে বিতরণ করা যাবে না। এমনকি বিক্রি কিংবা বিনামূল্যে বিতরণের প্রস্তাবও করা যাবে না। যদি কেউ আইনের এ বিধান লঙ্ঘন করে তা হলে সর্বোচ্চ দুই বছরের সশ্রম কারাদণ্ড বা সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা জরিমানা অথবা উভয়দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

খসড়া আইনে আরও বলা হয়েছে, কোন ব্যক্তি, কোম্পানি, করপোরেশন অথবা প্রতিষ্ঠানের মালিক, পরিচালক, অংশীদার বা কর্মকর্তারা জ্ঞাতসারে অথবা তাদের সম্মতিতে অপরাধ সংঘটিত হলে তারা সবাই দোষী সাব্যস্ত হবেন। তবে কোনো অভিযুক্ত যদি প্রমাণ করতে পারেন যে, ওই অপরাধ তার অজ্ঞাতসারে হয়েছে কিংবা তিনি অপরাধ সংঘটনে বাধা দিয়েছেন তা হলে তিনি দায়ী হবেন না। কোম্পানি কর্তৃক অপরাধ সংঘঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে যদি প্রমাণিত হয় যে, ওই অপরাধ কোম্পানির কোনো পরিচালক, ব্যবস্থাপক, সচিব কিংবা অন্য কোনো কর্মকর্তার সম্মতি অথবা যোগসাজশে অথবা তাদের অবহেলার কারণে সংঘটিত হয়েছে তা হলে তাদের দ-িত করা হবে। তবে এসব অপরাধের বিচারের ক্ষেত্রে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কিংবা দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তার লিখিত প্রতিবেদন ছাড়া কোন ঔষধ আদালত বা ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এ আইনের অধীন কোনো অপরাধ বিচারার্থে গ্রহণ করতে পারবে না। গেজেট দ্বারা প্রয়োজন অনুযায়ী ঔষধ আদালত প্রতিষ্ঠা করবে সরকার। অপরাধ তদন্তে ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক থানার ওসির মতো তার অধীন কোনো কর্মকর্তা বা পরিদর্শককে অপরাধ তদন্তের দায়িত্ব দিতে পারবেন।