ঢাকা টাইমসকে সোহেল তাজ

শেখ হাসিনা দায়িত্ব দিলে অবশ্যই পালন করবো

  জাফর আহমেদ | ঢাকা টাইমস

আওয়ামী লীগকে অবশ্যই নতুন প্রজন্মের আস্থার ঠিকানা হতে হবে। আর সেই দলটির সভাপতি শেখ হাসিনা তাকে কোনো দায়িত্ব দিলে তা পালনে সক্ষম হবেন বলে দৃঢ়প্রত্যয় জানিয়েছেন তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ।

স্বাধীন বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদের ছেলে সোহেল তাজ বলছেন, পঁচাত্তরে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও জাতীয় চার নেতাকে হত্যার পর নেতৃত্বশূন্য হয়ে পড়ে আওয়ামী লীগ। আর তখন তার মা সৈয়দা জোহরা তাজউদ্দীন আওয়ামী লীগের হাল ধরেছিলেন।

ঢাকা টাইমসের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট আর বর্তমান সময়ে তার নিজের রাজনৈতিক অবস্থানসহ নানা বিষয়ে কথা বলেন সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী সোহেল তাজ।

তিনি বলেন, ‘জাতীয় চার নেতার একজন আমার বাবা তাজউদ্দীন আহমদ। দেশের জন্য স্বাধীনতার সংগ্রাম, মুক্তির সংগ্রাম করেছেন। গণতন্ত্রের জন্য কাজ করে গেছেন। যখন বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতাকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়। তখন বাংলাদেশ গণতন্ত্র বলে কিছু ছিল না, আওয়ামী লীগ বলে কিছু ছিল না।’

‘তখন আওয়ামী লীগ নেতৃত্বশূন্য ছিল। তখন জীবন বাজি রেখে দায়িত্ব নিয়েছিলন আমার মা। তাজউদ্দীন আহমদ বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে বিশ্বাসঘাতক না করে জীবন দিয়ে প্রমাণ করেছেন আওয়ামী লীগ আর বঙ্গবন্ধুর জন্য তিনি কতটা নিবেদিত ছিলেন’—যোগ করেন তিনি।

সোহেল তাজ বলেন, ‘আমি সেই আওয়ামী লীগ পরিবারের সন্তান। আমি আওয়ামী লীগের সঙ্গে ছিলাম, আছি, থাকবো। আওয়ামী লীগ যদি কখনো আমাকে ডাকে—আমি আওয়ামী লীগের ডাকে সাড়া দিতে সর্বদাই প্রস্তুত। আওয়ামী লীগ যখন আমাকে ডাক দেবে তখনই আমি দলের জন্য, গণতন্ত্রের জন্য, দেশের মানুষের জন্য সাড়া দেবো।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশের ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে মন্তব্য করে সোহেল তাজ বলেন, ‘ইতোমধ্যে পদ্মাসেতু উদ্ধোধন করা হয়েছে। এছাড়া শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মেট্রোরেলের মত বড় বড় মেগা প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়ন হচ্ছে। এগুলো হচ্ছে উন্নয়ন অগ্রগতির একটা মহাযজ্ঞ।’

‘আমাদের দেশে যে পরিমাণ মানবসম্পদ আছে তা সম্পদে রূপ দিতে হলে অবশ্যই দক্ষ করে তুলতে হবে। বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা করতে হলে, দেশের উন্নয়ন করতে হলে দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার বিকল্পে নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই কাজই করে চলছেন। নতুন প্রজন্মকে শেখ হাসিনার দক্ষ নেতৃত্বের প্রতি আকৃষ্ট করে তুলতে হবে।’

বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক সংস্কৃতি অনিয়ম আর দর্নীতিতে নিমজ্জিত বলেও মনে করেন সোহেল তাজ। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। অবশ্যই আওয়ামী লীগকে নতুন প্রজন্মের আস্থার ঠিকানা হতে হবে। সেই আস্থার ঠিকানা হলো জননেত্রী শেখ হাসিনা। যাতে করে এই নতুন প্রজন্ম অনিয়মের বিরুদ্ধে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে, অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে কথা বলে। এগুলো বন্ধ করেই একটা সুন্দর সমাজ গড়তে হবে।’

আগামী নির্বাচনকে ঘিরে আওয়ামী লীগকে আস্থার জায়গা তৈরি করতে হবে উল্লেখ করে সোহেল তাজ বলেন, ‘ক্ষমতার মূল উৎস হচ্ছে জনগণ ও দল। দলকে অবশ্যই জনগণের হয়ে কাজ করতে হবে। আর সেটিই শেখ হাসিনা করে যাচ্ছেন।’

‘আমিও দলের সঙ্গে আছি। শেখ হাসিনার উন্নয়নের সঙ্গে আছি। মানুষের সঙ্গে না থাকলে, দলের সঙ্গে না থাকলে তো আর দল করা যায় না। তাই সবসময় দলের সঙ্গে আছি, শেখ হাসিনার সঙ্গে আছি’—বলেন সোহেল তাজ।

শেখ হাসিনার নির্দেশে কোনো দায়িত্ব পেলে তা পালনে প্রস্তুত বলেও জানাচ্ছেন সোহেল তাজ। ঢাকা টাইমসকে বলেন, ‘আমাকে কোনো দায়িত্ব দেওয়া হলে দেশের মানুষের কল্যাণে আর শেখ হাসিনার নির্দেশনায় যথাযথভাবে দায়িত্ব পালন করতে চেষ্টা করবো।’

‘আমি মনে করি, দল হচ্ছে পলিসি মেকার। দেশের স্বার্থে যে সিদ্ধান্ত নেবে তা অবশ্যই ভালো কোনো সিদ্ধান্ত হবে। শেখ হাসিনার নির্দেশনা অনুযায়ী আমাকে কোনো দায়িত্ব পালন করতে বলা হলে আমি সেই দায়িত্ব পালনে সক্ষম হবো। আগে যখন আমি পেরেছি এখনও পারবো।’

সোহেল তাজ বলছেন, স্বাধীনতার নেতৃত্বদানকারী দল আওয়ামী লীগকে অবশ্যই দুর্নীতি অনিয়মের বিরুদ্ধে চলতে হবে। সকল নেতাকর্মীকেই নৈতিক আর্দশ ও বঙ্গবন্ধুর আর্দেশ মেনে অনিয়ম-দুর্নীতির থেকে দূরে থাকতে হবে।

‘এছাড়া একটা দেশ উন্নত সমৃদ্ধশালী করার জন্য প্রয়োজন সুশাসন। প্রশাসনকে অবশ্যই জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে। সকলের ঐক্যবদ্ধ চেষ্টা আর সহযোগিতা নিয়েই বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা নির্মাণ করতে হবে।’