লন্ডন থেকে দিল্লি আসার পথে বিমানে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তার এবারের দিল্লি সফর অন্য সময়ের থেকে আলাদা। বিশেষ করে তাকে যখন ভারতের জামাই বলা হচ্ছে।
ঋষি বিয়ে করেছেন ভারতীয় শিল্পপতি নারায়ণমূর্তির মেয়ে অক্ষতা মূর্তিকে। ঋষি নিজেও ভারতীয় মূলের। তিনিই ভারতীয় মূলের প্রথম ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী। ভারত সফরে অক্ষতাও সুনাকের সঙ্গে আছেন।
সুনাক বলেছেন, “আমি দেখলাম, আমাকে ভারতের জামাই বলা হচ্ছে। নিশ্চয়ই খুব স্নেহভরে এই সম্বোধন করা হচ্ছে।”
ঋষি বলেন, “ভারত আমার কাছে খুবই কাছের দেশ। খুবই প্রিয় দেশ।” তার বক্তব্য, “আমি নির্দিষ্ট লক্ষ্য নিয়ে জি-২০ বৈঠকে যোগ দিতে যাচ্ছি। সেটা হলো, বিশ্বের অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করা।”
এদিকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন শুক্রবারই দিল্লি পৌঁছেছেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। সেখানে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হওয়ার কথা আছে।
শনিবার বাইডেন জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের দুই পর্বের বৈঠকে যোগ দেবেন। তিনি সব নেতাদের সঙ্গে গ্রুপ ছবিতে থাকবেন। গ্লোবাল বায়োফুয়েল অ্যালায়েন্সের নেতাদের সঙ্গেও ছবি তুলবেন। তিনি পার্টনারশিপ ফর গ্লোবাল ইনফ্রাস্ট্রাকচার ও ইনভেস্টমেন্ট ইভেন্টেও যোগ দেবেন। এরপর তিনি রাষ্ট্রপতি মুর্মুর দেওয়া নৈশভোজে যোগ দেবেন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান দেখবেন।
রবিবার তিনি রাজঘাটে গান্ধীজীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। তারপর তিনি ভিয়েতনাম যাবেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদি শুক্রবারই তিনটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করবেন। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে প্রথম বৈঠক করবেন তিনি। এরপর মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রাভিন্দ কুমার জগুনাথের সঙ্গে বৈঠক হবে। শেষ বৈঠক হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী মোদি নিজেই এক্স-এ (সাবেক টুইটার) পোস্ট করে এ কথা জানিয়েছেন।
দিল্লির নিরাপত্তা
দিল্লির রাস্তায় টহল দিচ্ছে এক লাখ পুলিশ। তাদের সঙ্গে কাছে অত্যাধুনিক এআই ক্যামেরা। এছাড়াও আছে প্রশিক্ষিত কুকুর। এদের কাজ হলো, দিল্লির রাস্তায় ঘুরে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
দিল্লির রাস্তায়, আবাসিক এলাকার ভেতরে এমনিতেই অনেক সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো আছে। তাছাড়াও অতিরিক্ত পাঁচ হাজার ক্যামেরা লাগানো হয়েছে।
গত এক বছর ধরে ভারতের ৬০টি শহরে জি-২০-এর ২২০টা বৈঠক হয়েছে। আর সেই বৈঠকে সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় যোগ দিয়েছে আফ্রিকার দেশগুলো। জি-২০-এর চিফ কোঅরডিনেটর হর্ষবর্ধন শ্রিংলা এ কথা জানিয়েছেন।
মোদির পাশে মনমোহন-রাহুল
জি-২০ বৈঠকে ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আলোচনা হবে। তার আগে অন্তত একটা দিক থেকে স্বস্তি পেলেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী সরকারের রাশিয়া-ইউক্রেন নীতি সমর্থন করেছেন।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসে সাক্ষাৎকারে মনমোহন বলেছেন, “একদিকে ভারত তার আর্থিক স্বার্থ ও সার্বভৌমত্বকে সর্বোপরি স্থান দিয়েছে, অন্যদিকে শান্তির জন্য আবেদন জানিয়েছে। এটা ঠিক পথ।”
কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও বলেছেন, “বিরোধীদলগুলো মনে করে, সরকারের রাশিয়া-ইউক্রেন নীতি মোটের উপর ঠিক আছে।”