বাংলাদেশে দুটি নির্বাচন ছিল বিতর্কিত ও অনিয়মে ভরা: অস্ট্রেলিয়ার ১৫ এমপি

বাংলাদেশে অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিস্থিতি কেমন, সেটি যাচাইয়ের জন্য এবার ঢাকায় আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকনির্বাচন পর্যবেক্ষক দল।

আগামী রোববার (৮ অক্টোবর) বাংলাদেশে আসছে দলটি। তারা ১২ অক্টোবর পর্যন্ত ঢাকায় অবস্থান করবে।

সফরকালে পররাষ্ট্র, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়, নির্বাচন কমিশনসহ বিভিন্ন মহলের সঙ্গে বৈঠক করবেন প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরিবেশ-পরিস্থিতি দেখতে বাংলাদেশে আসছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রাকনির্বাচন পর্যবেক্ষক দল। ওই প্রতিনিধিদলে ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক ইনস্টিটিউটের (এনডিআই) তিনজন ও ইন্টারন্যাশনাল রিপাবলিকান ইনস্টিটিউটের (আইআরআই) দুই-তিনজন বিশেষজ্ঞ থাকবেন। এ দলটি আসার বিষয়ে গত ২৫ জুলাই পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে জানায় ওয়াশিংটন।

২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচনে যুক্তরাষ্ট্র এবং ইইউ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে কোনো পর্যবেক্ষক পাঠায়নি।

বাংলাদেশে দুটি নির্বাচন ছিল বিতর্কিত ও অনিয়মে ভরা: অস্ট্রেলিয়ার ১৫ এমপি

বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় বাধাদানকারীদের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানিয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ১৫ এমপি। ২০১৪ ও ২০১৮ সালের নির্বাচন দুটি বিতর্কিত ও অনিয়মে ভরা ছিল বলে তারা মত দিয়েছেন।

দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টনি আলবেনিজকে এক চিঠিতে এ আহ্বান জানান। গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা যেন অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপের আহ্বান জানান তারা।

চিঠিতে বলা হয়েছে, আমরা বিশ্বাস করি, আগামী নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, শান্তিপূর্ণ ও অংশগ্রহণমূলক হওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ অবস্থায় বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে সমর্থন দিতে যুক্তরাষ্ট্র একটি বিশেষ ভিসানীতি ঘোষণা করেছে।

ওই নীতি অনুযায়ী, বাংলাদেশের নির্বাচনি প্রক্রিয়াকে দুর্বল করার সঙ্গে যুক্ত সরকারি কর্মকর্তা, রাজনৈতিক দলের সদস্য, আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, বিচার বিভাগ ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলোর সদস্যদের জন্য ভিসা নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথা জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।

এতে অস্ট্রেলিয়ার এমপিরা আরও উল্লেখ করেন, আমরা গণতান্ত্রিক নির্বাচন প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ণ করে এমন যে কোনো কাজকে উদ্বেগজনক মনে করি। এর মধ্যে আছে ভোট কারচুপি, ভোটারদের ভয় দেখানো এবং রাজনৈতিক দল, ভোটার, সুশীল সমাজ ও মিডিয়াকে মতপ্রকাশে বাধা দেওয়া।

এমতাবস্থায় বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে ক্ষুণ্ন করার জন্য দায়ী ব্যক্তিরা যাতে অস্ট্রেলিয়ায় প্রবেশ করতে না পারে তা নিশ্চিত করার জন্য ম্যাগনিটস্কি নিষেধাজ্ঞার মাধ্যমে হোক বা অন্য কোনো উপায়ে হোক, যুক্তরাষ্ট্রের মতো আমাদেরও অনুরূপ নীতি প্রণয়ন করা অত্যাবশ্যক।

চিঠিতে আরও বলা হয়, বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন দলের সিনিয়র সদস্যদের ক্ষমতার অপব্যবহার এবং সাধারণ নাগরিক, অ্যাকটিভিস্ট ও বিরোধী রাজনৈতিক দলের সদস্যদের মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এই অপরাধগুলো অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল এবং মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের প্রতিবেদনে নথিভুক্ত করা হয়েছে।

বাংলাদেশের ২০১৪ ও ২০১৮ সালে অনুষ্ঠিত বিগত দুটি জাতীয় নির্বাচন বিতর্ক এবং অনিয়মে ভরা ছিল।

চিঠিতে স্বাক্ষরকারী এমপিরা হলেন— সিনেটর ডেভিড শোব্রিজ, সিনেটর জর্ডন স্টিল-জন, অ্যাডাম ব্যান্ড এমপি, সিনেটর লারিসা ওয়াটার্স, সিনেটর নিক ম্যাককিম, সিনেটর জ্যানেট রাইস, সিনেটর বারবারা পোকক, এলিজাবেথ ওয়াটসন-ব্রাউন এমপি, স্টিফেন বেটস এমপি, সিনেটর মেহরীন ফারুকী, সিনেটর পিটার হুইস-উইলসন, সিনেটর দরিন্দা কক্স, সিনেটর পেনি অলম্যান, ম্যাক্স চ্যান্ডলার এমপি এবং সিনেটর সারাহ হ্যানসন।