আ.লীগের হেভিওয়েট নেতাদের কার কত সম্পদ
জাফর আহমেদ, ঢাকা টাইমস

আওয়ামী লীগসহ ২৯টি রাজনৈতিক দল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ভোটের মাঠে লড়াই করতে প্রস্তুত থাকলেও দেশের মানুষের আগ্রহ বেশি ক্ষমতাসীন দলকে ঘিরেই। বিএনপি নির্বাচনে না থাকায় আওয়ামী লীগই যেমন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু তেমনি নেতাদের সম্পদ নিয়েও ভোটারদের মধ্যে চলছে বিচার বিশ্লেষণ।

সরকারের মন্ত্রীদের কার কত সম্পদ- এ নিয়ে যেমন কৌতূহল সব মহলে তেমনি কেন্দ্রীয় কমিটির নেতাদের সম্পদ নিয়েও জানার আগ্রহ কম নয়। বিভিন্ন সময় দলের নেতাদের সম্পদ নিয়ে নানা মুখরোচক কথাবার্তাও শোনা যায়। তবে আওয়ামী লীগের নেতাদের সব তথ্য পাওয়া না গেলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে দলটির এক ডজন মনোনীত প্রার্থীর হলফনামা থেকে সম্পদের তথ্য সংগ্রহ করেছে ঢাকা টাইমস।
হলফনামা ঘেঁটে দেখা গেছে কোনো প্রার্থীর বার্ষিক আয় ও সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে আবার কারো সম্পদের পরিমাণ কমছে। এসব নেতার স্ত্রীদের অনেকের সম্পদ বেড়েছে। আবার কোনো নেতা স্ত্রীর কাছ থেকে অর্থ ধার করেছেন বলেও হলফনামায় উল্লেখ করেছেন ।

যাদের হলফনামায় এসব তথ্য পাওয়া গেছে তারা হলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম, ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক এসএম কামাল হোসেন, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবহান গোলাপ ও কার্যনির্বাহী সদস্য সাঈদ খোকন।

ওবায়দুল কাদের: হলফনামা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কাছে নগদ টাকা আছে ৮০ হাজার, এছাড়া তার স্ত্রীর নগদ টাকা আছে ৭০ হাজার টাকা। তিনি বই লিখে বছরে আয় করেছেন চার লাখ ২৫ হাজার ৩০০ টাকা। মন্ত্রী হিসেবে বছরে বেতন-ভাতা বাবদ আয় ১২ লাখ ৬০ হাজার টাকা, অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া বাবদ বছরে আয় ১৪ লাখ ২৪ হাজার ৯২৪ টাকা। একই খাতে তার স্ত্রীর আয় তিন লাখ ৯৬ হাজার ৯৬৬ টাকা।

এছাড়া তার নিজ নামে ছয় লাখ ৯৭ হাজার ২৮৪ টাকার ও স্ত্রীর নামে চার লাখ ৮০ হাজার ৯২২ টাকার সঞ্চয়পত্র রয়েছে। নিজের ব্যবসা খাতে বাৎসরিক কোনো আয় না থাকলেও স্ত্রী ব্যবসা থেকে বাৎসরিক আয় করেন ৮৬ হাজার ৭২৭ টাকা। এছাড়া আইন পেশা থেকে বছরে দুই লাখ ৫৮ হাজার ৯০০ টাকা আয় করেন তার স্ত্রী।

হলফনামা সূত্রে আরও জানা গেছে, ব্যাংকে ৭৫ লাখ ৬৩ হাজার ৬০৫ টাকা আছে ওবায়দুল কাদেরের। আর স্ত্রীর নামে ৫১ লাখ ৯৭ হাজার ৬৪৯ টাকা জমা আছে। পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন সঞ্চয়পত্র ও স্থায়ী আমানতে ওবায়দুল কাদেরের বিনিয়োগ রয়েছে এক কোটি ৪৯ লাখ ৪৬ হাজার ২৯৩ টাকা ও তার স্ত্রীর বিনিয়োগ রয়েছে ৭৩ লাখ ৬২ হাজার ৮১৫ টাকা। কাদেরের নিজ নামে রয়েছে ৭৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা দামের একটি গাড়ি, এক লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালঙ্কার, ৯ লাখ ২০ হাজার টাকার ইলেকট্রনিকস সামগ্রী ও আট লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের আসবাবপত্র। স্ত্রীর নামে রয়েছে এক লাখ টাকার স্বর্ণালঙ্কার, ১২ হাজার টাকার টিঅ্যান্ডটি, মোবাইল ও এক লাখ টাকার আসবাবপত্র। এছাড়া উত্তরায় নিজ নামে ৫০ লাখ ৭৯ হাজার ৬০০ টাকা মূল্যের পাঁচ কাঠা জমি ও স্ত্রীর নামে ১৬ লাখ ৪০ হাজার টাকা মূল্যের ১০৫০ বর্গফুটের একটি ফ্ল্যাট রয়েছে বলেও হলফনামায় উল্লেখ করা হয়েছে

কৃষিমন্ত্রী: কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক টাঙ্গাইল-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী। গত নির্বাচনে তার নামে কোনো নগদ টাকা না থাকলেও দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে নগদ টাকা রয়েছে ৪৮ লাখ ৭২ হাজার ৬০৩ টাকা। স্ত্রীর নামে কোনো টাকা নেই হলফনামায় উল্লেখ করা হলেও বাড়ি, অ্যাপার্টমেন্ট, দোকান ভাড়াসহ বেড়েছে তিনগুণ। যদিও একাদশ নির্বাচনে হলফনামায় তার স্ত্রী শিরিন আক্তার বানু নামে ১ লাখ ১৫ হাজার ৫০০ টাকা উল্লেখ করা হয়েছিল। হলফনামা সূত্রে জানা গেছে, দশম জাতীয় নির্বাচনে শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানতের ওপর আয় না থাকলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৭২৬ টাকা আয় ছিল। তবে দ্বাদশ নির্বাচনে কয়েকগুন বেড়ে গেছে এই খাতের আয়।

অ্যাডভোকেট মো. কামরুল ইসলাম: তিনি ঢাকা-২ আসনের আওয়ামী লীগের প্রার্থী। তার আয় বেড়েছে দ্বিগুণের বেশি। হলফনামার তথ্যমতে, টেলিভিশনে টকশো করে বছরে আয় করেন ৫০ হাজার টাকা। এর বাইরে মুক্তিযোদ্ধা ভাতা হিসেবে ২ লাখ ৬৭ হাজার এবং ব্যাংক সুদ থেকে ৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৯ টাকা আয় তার। এমপির বেতন বছরে আয় করেছেন ২৩ লাখ ১৯৯ হাজার টাকা। প্রায় দেড় কোটি টাকার দুটি বিলাসবহুল গাড়ি রয়েছে। তিন মেয়াদে দুটি প্লট, দুটি ফ্ল্যাটের পাশাপাশি একাধিক গাড়ির মালিক হয়েছেন তিনি। বার্ষিক আয় ১৯৫ লাখ ২ হাজার ৬৬৭ টাকা। বাড়ি, দোকান ও অন্যান্য ভাড়া থেকে আয় ৪ লাখ ১৪ হাজার টাকা। গত নির্বাচনের বাড়ি ভাড়া থেকে আয় করতেন ১ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। তার এবার তাঁর আয় দ্বিগুণের বেশি। কৃষি ও ব্যবসা থেকে কামরুল ইসলামের কোনো আয় নেই। তাঁর নগদ আছে ৩ লাখ ৭৬ হাজার ৮৮১ টাকা। ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ২ কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫৬ টাকা।

হলফনামার তথ্যমতে, স্থাবর সম্পদের মধ্যে কামরুল ইসলাম ও তাঁর ওপর নির্ভরশীল কারও কৃষিজমি নেই। মিরপুরে ৪ কাঠা অকৃষি জমি রয়েছে। যার দাম ৩ লাখ ৬১ হাজার ৬০০ টাকা জন্ম ১০ কাঠা জমি রয়েছে পূর্বাচলে। যার দাম ৩৯ লাখ ৪৮ হাজার ৪১৫ টাকা।

নানক: ঢাকা-১৩ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী জাহাঙ্গীর কবির নানক। নৌকার এ প্রার্থী তার হলফনামায় ব্যাংক, স্ত্রী-কন্যা ও ব্যবসায়িক দায়ের তথ্য জানিয়েছেন। এতে নানক উল্লেখ করেন, স্ত্রীর কাছে ৮৮ লাখ টাকা এবং কন্যার কাছে এক কোটি ৫৩ লাখ ২০ হাজার টাকা দেনা রয়েছে তার। অগ্রণী ব্যাংক ও ইউসিবিএলে তার ঋণের পরিমাণ ২ কোটি ৮৬ লাখ ১৯ টাকা। এরমধ্যে অগ্রণী ব্যাংকে তার হোম লোনের পরিমাণ ২ কোটি ৯ লাখ ১৬ হাজার টাকা। এছাড়াও ইউসিবিএল থেকেও ৫২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ও ১০ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ঋণ নেওয়া আছে। একই ব্যাংকে অটো লোন রয়েছে ১৪ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। এছাড়া নির্মাণসামগ্রী কেনা বাবদ ব্যবসায়িক দায় ৩৩ লাখ ৭৮ হাজার টাকা রয়েছে তার।

আব্দুর রহমান: তার বার্ষিক আয় ২৮ লাখ ১১ হাজার ৬শ ২৪ টাকা। নিজের নামে নেই কোনো ফ্ল্যাট, গ্রাম কামালদিয়ায় রয়েছে একটি বাড়ি। তার স্ত্রীর নামে রয়েছে ৪টি ফ্ল্যাট হলফনামা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। আব্দুর রহমান আয়ের উৎস দেখিয়েছন, কৃষিখাত থেকে ১ লাখ ১৫ হাজার ২শ ৫০ টাকা, ব্যবসা থেকে ৬ লাখ ২৭ হাজার ৪শ টাকা, শেয়ার, সঞ্চয়পত্র, ব্যাংক আমানত থেকে ৮ লাখ ৩৪ হাজার ৩শ ৭২ টাকা, চাকরি (ব্যবস্থাপনা পরিচালক হিসেবে পারিতোষিক প্রাপ্তি) ৪ লাখ টাকা, জমি বিক্রয় থেকে মূলধনী লাভ ৩ লাখ ৬৭ হাজার ৬শ ২ টাকা এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতা ও পারিতোষিক হিসেবে ৪ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। বর্তমানে তার নিজ নামে নগদ ২ লাখ ৬৭ হাজার ৯শ ৯২ টাকা, স্ত্রীর নামে ১৩ লাখ ৩৫ হাজার ৮শ ১০ টাকা অস্থাবর সম্পদ রয়েছে।

এছাড়া হলফনামায় আরও উল্লেখ করা হয়েছে, ৭০ লাখ ২৫ হাজার ৪শ ৫ টাকা মূল্যের জিপ গাড়ি, স্ত্রীর নামে ২৭ লাখ ৭৫ হাজার টাকা মূল্যের প্রাইভেটকার। নিজ নামে ৩০ তোলা স্বর্ণ, স্ত্রীর নামে ৩০ তোলা স্বর্ন, নিজ নামে ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র এবং স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকার আসবাবপত্র রয়েছে। এছাড়া অন্যান্য ব্যবসার মূলধন নিজ নামে ১৯ লাখ ২৩ হাজার ৯শ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ১ কোটি ১৪ লাখ ৬৪ হাজার ৩শ ৫০ টাকা রয়েছে।

আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হানিফ: তিনি কুষ্টিয়া-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী। গত ৫ বছরে হানিফের বার্ষিক আয় বাড়লেও কমেছে সম্পদের পরিমাণ। ঋণ রয়েছে ১০২ কোটি ৮৬ লাখ ১১ হাজার ৭০০ টাকা। বার্ষিক আয় ৩ কোটি ৬৪ লাখ ৪ হাজার ১০ টাকা। স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ২০ কোটি ৯৯ লাখ ১৬ হাজার ১১১ টাকা। নগদ টাকা রয়েছে ২ কোটি ১৬ হাজার ৪৫২ টাকা। তবে হানিফের হলফনামায় তার স্ত্রীর স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের কোনো তথ্য নেই।

বাহাউদ্দিন নাছিম: ঢাকা-৮ আসনের নৌকার প্রার্থী আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিমের বার্ষিক আয়, স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ দশ বছরের ব্যবধানে বৃদ্ধির সঙ্গে তার দেনার পরিমাণও বেড়েছে। দশ বছরে তার আয় বেড়েছে ৩৪ শতাংশ। হলফনামায় দেখা গেছে, নাছিমের বার্ষিক আয় ২ কোটি ৫৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৮১ টাকা। ২০১৪ সালের দশম সংসদ নির্বোচনে হলফনামায় তার আয় দেখানো হয়েছিল ১ কোটি ৮৯ লাখ ১৪ হাজার ৩৩৯ টাকা। ২০১৪ সালে তার বার্ষিক আয়ের প্রায় পুরোটাই ছিল ব্যবসা থেকে। এবার ব্যবসা থেকে কোনো আয় দেখানো হয়নি হলফনামায়। এবারের হিসাবে সর্বোচ্চ ৮৪ লাখ ৯৩ হাজার টাকা আয় দেখানো হয়েছে এফডিআর এর সুদ থেকে। বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে আয় ৬০ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। কোম্পানি থেকে পারিতোষিক পান ৫৫ লাখ ৫০ হাজার টাকা। দশ বছর আগে পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের বার্ষিক আয় দেখিয়েছিলেন ১১ লাখ ৯২ হাজার ৮১৫ টাকা। অর্থাৎ আয় বেড়ে প্রায় তিনগুণ হয়েছে।

ডা. দীপু মনি: চাঁদপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী। তার সম্পদ ও ঋণ দুটোই বেড়েছে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে গাড়ি বাবদ এক্সিম ব্যাংকে পাঁচ লাখ ৮৬ হাজার ৯০৫ টাকার ঋণ দেখালেও এবার বেড়েছে কয়েক গুণ। আগে ছিল ৩৫ লাখ টাকার দুটি ফ্ল্যাট। পাঁচ বছরে তিন কোটি ৬০ লাখ টাকার তিনটি ফ্ল্যাটের মালিক। তবে এক কোটি ১১ লাখ ৭৫ হাজার ৫৪৩ টাকা ব্যক্তিগত ঋণও রয়েছে বলে হলফনামায় উল্লেখ করেছেন তিনি।

সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন: খুলনা-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী এস এম কামাল হোসেন এবারই প্রথম সংসদ নির্বাচনে লড়ছেন। হলফনামার তথ্যমতে, বার্ষিক আয় ৪৭ লাখ ২৭ হাজার টাকা। মোট সম্পদ ৪ কোটি ৯০ লাখ টাকার। এরমধ্যে ২০ লাখ ১৭ হাজার নগদ টাকা। ব্যবসা থেকে বছরে ২৮ লাখ ৯ হাজার টাকা, সঞ্চয়পত্র থেকে ২ লাখ ২০ হাজার টাকা এবং এফডিআর ও ব্যাংক থেকে লভ্যাংশ পান ১৬ লাখ ৯৭ হাজার টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় বছরে (ছেলে-মেয়ে ও স্ত্রী) ৩০ লাখ ৫ হাজার টাকা। ব্যাংকে জমা ২৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা, ৩ কোটি ৪৫ লাখ স্থায়ী আমানত, ২০ লাখ টাকা মূল্যের একটি গাড়ি, গৃহস্থালি দ্রব্য এবং ব্যবসার মূলধন ৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা। এ ছাড়া স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৮১ দশমিক ৮৪ ডেসিমেল কৃষি জমি, ৩ কাঠা অকৃষি জমি এবং ১২ লাখ ৯০ হাজার টাকা দামের একটি দোকান রয়েছে। কামাল হোসেনের স্ত্রী শিক্ষকতা পেশায় জড়িত। তার সম্পদ রয়েছে ৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকার। এর মধ্যে ১ কোটি ৮৬ লাখ টাকা মূল্যের একটি ফ্ল্যাট, ৩৫ লাখ ২৮ হাজার নগদ টাকা, ব্যাংক জমা ২৩ লাখ ৫৬ হাজার টাকা, ১ কোটি ৩৬ লাখ ৮৩ হাজার টাকার স্থায়ী আমানত রয়েছে। তার ছেলে-মেয়ের যৌথ নামে একটি ফ্ল্যাট ছাড়াও তাদের ৭৭ লাখ ৪২ হাজার টাকার সম্পদ রয়েছে।

আবদুস সোবাহান গোলাপ: মাদারীপুর-৩ আসনের নৌকার প্রার্থী। তার হলফনামার তথ্যমতে নগদ অর্থের পরিমাণ বেড়েছে ৪ দশমিক ৩১ গুণ। তার স্ত্রী ও নিজের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের বিবরণী পেশ করেন।

গোলাপ এমপি হওয়ার আগে ২০১৮ সালে কোনো গাড়ি ছিল না। তবে এমপি হয়ে কিনেছেন কোটি টাকার গাড়ি। ২০১৮ সালে তার নিজের নামে ব্যাংক বা আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমা ছিল ৩৩ লাখ ৬২ হাজার ৪১৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল ৫১ লাখ ৯ হাজার ৬৯০ টাকা। বর্তমানে তার জমা অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে এক কোটি ৪৫ লাখ ৩ হাজার ৯৩১ টাকা এবং স্ত্রীর রয়েছে ২৮ লাখ ১৮ হাজার ৫৩৮ টাকা। তার সম্পদের বিবরণী বিশ্লেষণ করে জানা গেছে। ২০১৮ সালে তার নগদ টাকা ছিল ৭৯ লাখ ৬৫ হাজার ২৬৬ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ছিল এক কোটি ১১ লাখ ১৪ হাজার ১৩১ টাকা।

সাঈদ খোকন ঢাকা-৬ আসন: ২০১৫ সালে দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) নির্বাচনে মেয়র পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সময় আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ সাঈদ খোকনের কাছে নগদ ছিল ১ কোটি ১০ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। এবার তাঁর নগদ রয়েছে ২ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ওই সময় তাঁর স্ত্রীর হাতে ৩০ লাখ টাকা নগদ থাকলেও এখন রয়েছে ১ কোটি ১৫ লাখ টাকা। এছাড়া সাঈদ খোকনের বস্তু, ঋণপত্র ও শেয়ার আছে ৬৫ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার। তাঁর গাড়িটির দাম ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা।

জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেওয়া তাঁর হলফনামা বিশ্লেষণ করে এ তথ্য পাওয়া যায়। সাঈদ খোকন আসন্ন সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৬ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী।

হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, নগদ টাকা ছাড়াও ব্যাংকে আছে তাঁর নিজের ৪ কোটি ৩৬ লাখ ২৯ হাজার এবং স্ত্রীর ৮৫ লাখ ১ হাজার ২৩০ টাকা। এ ছাড়া তাঁর বন্ড, ঋণপত্র ও শেয়ার আছে ৬৫ কোটি ১৬ লাখ ৫০ হাজার টাকার। এখন তিনি যে গাড়ি ব্যবহার করেন তার দাম ২ কোটি ১৮ লাখ টাকা। ৩২ লাখ টাকার আরেকটি গাড়ি আছে তাঁর স্ত্রীর। তবে ২০১৫ সালে মেয়র পদে নির্বাচন করার সময় সাঈদ খোকনের গাড়ির দাম ছিল ৩৮ লাখ এবং স্ত্রীর গাড়ির দাম ৩২ লাখ টাকা।

হলফনামায় ১৫ লাখ টাকার স্বর্ণালংকার থাকার কথা লিখেছেন সাঈদ খোকন। তাঁর স্ত্রীর কাছেও আছে ২০ লাখ ৫০ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার।

তবে ২০১৫ সালে সাঈদ খোকনের কোনো স্বর্ণালংকার ছিল না। স্ত্রীর ছিল ২ লাখ ৫ হাজার টাকার স্বর্ণালংকার। নিজের ৫০ লাখ টাকার ও স্ত্রীর ৩ লাখ টাকার আসবাবপত্র রয়েছে বলে লিখেছেন সাবেক এই মেয়র।

নিজেকে ব্যবসায়ী উল্লেখ করে সাঈদ খোকন হলফনামায় লিখেছেন, ব্যবসায় তাঁর নিজের বিনিয়োগ ৩ কোটি ৫ লাখ ৭ হাজার ও স্ত্রীর ২ কোটি ৪৮ লাখ ৩৫ হাজার টাকা। ঢাকার নাজিরাবাজারে পৈতৃক সূত্রে পাওয়া একটি বাড়ি আছে তাঁর। এ ছাড়া, গুলশানে আরেকটি বাড়ি রয়েছে, যার দাম ২৩ কোটি ১১ লাখ ও বনানীর বাড়ির দাম ৫১ কোটি ৫৭ লাখ টাকা। তাঁর নিজের না থাকলেও স্ত্রীর নামে অকৃষি জমি রয়েছে ১১ লাখ ৫০ হাজার টাকার।

(সূত্র: ঢাকাটাইমস/১০ডিসেম্বর/)