১৮ মার্চ ২০২৫ , ১:৩৮:০৮
ঘুমের সুবিধার জন্য অনেকে রাতে কাপড় বদলিয়ে শোয়ার চেষ্টা করেন। রাতের পোশাককে নাইটি বলে। পুরুষ ও নারীর আলাদা আলাদা ধরনের রাতের পোশাক রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো- নারীরা নাইটি পরিধান করে নামাজ পড়তে পারবে কি?
এর উত্তর হলো- নারীরা নামাজে শুধু মুখমণ্ডল, হাতের কব্জি ও পায়ের পাতা খোলা রাখতে পারবে। এছাড়া আর কোনো অংশ যদি নামাজের সময় বেরিয়ে যায়, তাহলে নামাজ শুদ্ধ হয় না। সুতরাং নাইটি যদি এমন হয় যে, এটি পরিধানের পর শরীরের উক্ত তিন অংশ ছাড়া অন্য কোনো অংশের আকৃতি ফুটে উঠে, তাহলে এধরনের নাইটি নামাজে পরিধান করা জায়েজ হবে না।
আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘প্রাপ্ত বয়সী নারীরা ওড়না ছাড়া নামাজ আদায় করলে তা আল্লাহর নিকটে কবুল হবে না।’ (সুনান আবু দাউদ, হাদিস : ৬৪১)
উল্লেখ্য, নামাজে কেবল সতর আবৃত করতেই নির্দেশ দেওয়া হয়নি, বরং নামাজে সাজসজ্জার পোশাকও পরিধান করতে বলা হয়েছে। যেমন, আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘হে বনী-আদম! তোমরা প্রত্যেক নামাযের সময় সাজসজ্জা পরিধান করে নাও।’ (সুরা আ’রাফ, আয়াত : ৩১)
ইসলামিক শরীয়াহ অনুসারে, আওরাহ বা সতর আরবি: عورة ‘আওরাহ, আরবি: ستر, সতর ) হল মানব শরীরের সে সকল অংশ যেগুলো অপরের সামনে ঢেকে রাখা বাধ্যতামুলক। নারী পুরুষ লিঙ্গ, বয়স ও সম্পর্কভেদে আওরাহর পরিমাণে পার্থক্য রয়েছে।
মহিলাদের আওরাহ তুলনামূলক জটিল একটি বিষয় এবং পরিস্থিতি সাপেক্ষে তা বিভিন্ন হয়| দৈনন্দিন প্রার্থনা বা নামাযের সময় আওরাহ হল মুখমন্ডল ও হাতের কবজি ছাড়া বাকি অংশ| স্বামী স্ত্রী পরস্পর নির্জনে থাকার সময় পরস্পরের জন্য আওরাহর কোন বিধিনিষেধ নেই| তবে ব্যক্তিগতভাবে একলা থাকার সময় নারী পুরুষ উভয়কেই যৌনাঙ্গ ঢেকে রাখতে বলা হয়েছে, বিশেষ কিছু ক্ষেত্র ছাড়া যেমন একাকী স্নান ও শৌচকাজের সময়| মাহরাম পুরুষদের সামনে সাবালিকা মেয়ে ও পরিণত বয়স্কা মহিলাদের জন্য আওরাহ হল মুখমন্ডল এবং হাতের কবজি পর্যন্ত অংশ ছাড়া দেহের বাকি অংশ|
সুতরাং যে ধরনের পোশাক পরিধান করে সাধারণ লোকের সামনে যাওয়া লজ্জাজনক মনে করা হয়, তা নামাজে পরিধান করা মাকরূহ।
মহিলাদের সর্বাঙ্গ সতরের অন্তর্ভুক্ত দুই হাতের তালু ও চেহারা ব্যতীত (আবুদাঊদ হা/৪১০৪; মিশকাত হা/৪৩৭২)। গৃহকক্ষ নিজেই পর্দা। তবুও সেখানে সাধ্যমত সর্বাঙ্গ ঢেকে ছালাত আদায় করবে। অনিচ্ছাকৃত অসাবধানতা ক্ষমার্হ। আল্লাহ বলেন, তোমরা সাধ্যমত আল্লাহ্কে ভয় কর’ (তাগাবুন ৬৪/১৬)। উক্ত অবস্থায় তার ছালাত কবুল হওয়ায় কোন বাধা নেই।