মিনহাজ আমান | কদরুদ্দীন শিশির ২৭ মার্চ ২০২৫ , ৫:৩৬:৫৩
সারা দুনিয়াতে ইনফরমেশন ওয়ার অনেকদূর চলে গেছে। বাংলাদেশে এখনো আলোচনা আছে মিসিনফরমেশন-ডিসিনফরমেশন নিয়ে। এসব আলোচনার করতে আমাকে টকশোতে সভা সেমিনারে ডাকে, আমি কোন বিনয় ছাড়া রিজেক্ট করি।
অথচ সারা দুনিয়ায় এখন চলছে ইনফরমেশন ইনফ্লুয়েন্স অপারেশন। এর মানে আর আপনাকে ভুয়া খবর দিয়ে ঘায়েল করার পুরনো কায়দার বাইরে এসে একটা গ্রানড ন্যারেটিভ দিয়ে আপনাকে ঘায়েল করার চেষ্টা করবে। সেখানে কিছু ভুয়া খবর থাকবে, ন্যারেটিভকে শক্ত করতে। কিন্তু ডিবাংকেবল ভুয়া খবর দিয়ে এখন আর ঘায়েল করার চেষ্টা করা হয়না। করা হয়, অলটারনেটিভ ট্রুথ, আনইউজ্যাল এনালাইসিস এবং কনসেন্ট ম্যানুফ্যাকচারের মাধ্যেমে। সেটা ভিন্ন আলাপ.
গত দুতিনদিন ধরে চলা দ্য গার্ডিয়ানের নিউজের আগে ভার্জিনিয়া বেজড এই নিউজ পোর্টাল ইন্ট্রান্যাশোনাল পলিসি ডাইজেস্ট বা আইপিডী নিয়ে কোন আলোচনা হচ্ছিল না। কিন্তু আমাদের চোখে পরে প্রথম প্রায় দেড়মাস আগে যখন সজীব ওয়াজেদ জয় এটির লিঙ্ক শেয়ার করেন। তারপর থেকে আমরা এর এডীটর-রাইটার এবং কারা শেয়ার করছে তাদের মনিটর করতে থাকি। এরা মূলত একটি বিদেশী অপিনিওন প্লাটফর্ম যেখানে যে কেউ লেখা ছাপাতে পারতো। কিন্তু ৫ আগস্টের পর কোনো এক অদৃশ্য করণে তারা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুধু ইউনুস-বিরোধী লেখাই ছাপত। আমরা সে সকল অপিনিয়ন পিসগুলো প্রতিদিন ট্র্যাক করতাম। ফাইনালি তাদের অপারেশন ট্রাক করতে সক্ষম হই এবং মূলত ইউনুস বিরোধী লেখা ছাপানোর জন্যে প্লাটফর্মটিতে ভুয়া লেখকদেরও ব্যবহার করা হয়। আমরা প্রত্যেকটি ফেইক অথর্ব চিহ্নিত করতে সক্ষম হই। কিন্তু তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে আর শক্ত প্রমাণের জন্যে আমরা দুটি ভুয়া অথর তৈরি করি, একজন নারী একজন পুরুষ। একজন ইউনুস- জাতিসঙ্ঘের কঠিন ক্রিটিক করে একটি লেখা পাঠায়, আরেকটি নতুন দল এনসিপির পক্ষে লেখা পাঠায়। দুটিই আমাদের তৈরি ভুয়া প্রফাইল, ভুয়া ইমেইল, ভুয়া সোশ্যাল মিডিয়া প্রেজেন্স। মজার ব্যাপার হল, তারা ইউনুস বিরোধী লেখাতই খুব সাদর আগ্রহে ছাপে, এমনকি টাইটেল বদলে লেখাটি আর বেশি ইউনুস বিরোধী করে তোলে। কিন্তু এনসিপির পক্ষে দেয়া লেখাটি আজ প্রায় ২৩ দিন হল ছাপাচ্ছেনা। সম্পাদকের সাথে যখন এগুলো খোলাসা করা হয়, তিনি থতমত খেয়ে ভূগোল ছাড়েন।
পরে গার্ডিয়ান মারফত আমরা জানলাম, এ ভুয়া লেখকের লেখাগুলো ব্রিটিশ পার্লামেন্তে পাঠানো হচ্ছিল যাতে বাংলাদেশের সরকার এবং তার কালো টাকা ফিরিয়ে আনার যে কার্যক্রম চলছে তাকে ব্যাহত করা যায়।
বিস্তারিত আমাদের দীর্ঘ লেখায় পড়ার অনুরোধ রইল।
এবং এই অসাধারণ কাজটি করেছে আমাদের টিম। আমি নাম না উল্লেখ করে তাদের ধন্যবাদ দিতে চাই। কারণ তারা আপনাকেও প্রতিনিয়ত মনিটর করছে। সো সাধুরা সাবধান।
গার্ডিয়ানের নিউজ চাউড় হওয়ার পর Qadaruddin Shishir ভাই ওয়েবসাইটের ফেইক অথরদের চিহ্নিত করা শুরু করে দেয়। কিন্তু তার প্রায় দেড় মাস আগে েদের চিহ্নিত করে আমরা এদের ট্র্যাপ করার জন্যে একজন ফেইক অথরের লেখা পাঠাই আইপিডীতে। কিন্তু আমরা যেহেতু সিরিয়াস ইনভেস্টিগেসন করছি, এভাবে ছেড়ে না দিয়ে আমরা শতভাগ প্রমাণের অপেক্ষা করছিলাম।
কিন্তু শিশির ভাইয়ের পোস্টের পর আমাদের টিমের ভয় ছিল, আমাদের ফেইক অথরটাই ধরা খেয়ে যায় কিনা। কিন্তু শিশির ভাইয়ের নজর এড়ায় আমাদের ফেইক অথরটাই।
কি বন্দুরা কেমং দিলাম?
(পরে অবশ্য ভাইকে জানাই, আপনি থামেন, আমরা কাজ করতেসি)