মালয়েশিয়ায় যেতে সর্বোচ্চ খরচ ৭৮,৯৯০ টাকা:
ব্যক্তিগত পর্যায়ে একজনের সর্বোচ্চ খরচ ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। মালয়েশিয়া যাওয়ার উড়োজাহাজ ভাড়াসহ অন্যান্য আনুষঙ্গিক খরচ বহন করবে নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ।

গত মঙ্গলবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের এক অফিস আদেশ অনুযায়ী, মালয়েশিয়াগামী কর্মীর শুধু বাংলাদেশে অভ্যন্তরীণ খরচগুলো বহন করতে হবে। এর মধ্যে পাসপোর্ট খরচ, স্বাস্থ্য পরীক্ষা, নিবন্ধন ফি, কল্যাণ ফি, বিমা, স্মার্টকার্ড ফি, সংশ্লিষ্ট রিক্রুটিং এজেন্সির সার্ভিস চার্জ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

এসব মিলে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে যেতে ইচ্ছুক কোনো ব্যক্তিকে মোট ৭৮ হাজার ৯৯০ টাকা নিজস্ব তহবিল থেকে খরচ করতে হবে।

২০২১ সালে বাংলাদেশ ও মালয়েশিয়ার মধ্যে সই হওয়া সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, উড়োজাহাজ ভাড়া, মালয়েশিয়ার অভিবাসন বিভাগের ‘সিকিউরিটি ডিপোজিট’, বিমা, মালয়েশিয়ায় স্বাস্থ্য পরীক্ষা, করোনার সংক্রমণ পরীক্ষাসহ ১৫টি খাতের খরচ সংশ্লিষ্ট নিয়োগকারী কর্তৃপক্ষ বহন করবে।

এই আদেশের মাধ্যমে মন্ত্রণালয় তাদের পূর্ববর্তী আদেশ বাতিল করেছে। ২০১৭ সালের সেই আদেশে সর্বোচ্চ খরচ ধরা হয়েছিল ১ লাখ ৬০ হাজার।

অফিস আদেশে আরও বলা হয়, জনপ্রতি সর্বোচ্চ অভিবাসন খরচ সংক্রান্ত এই নির্দেশনা শিগগির কার্যকর হবে।

তবে, এখনো নতুন করে কোনো কর্মী মালয়েশিয়ায় পাঠানো শুরু হয়নি।

দীর্ঘ তিন বছর স্থগিত থাকার পর মালয়েশিয়ার শ্রম-বাজার বাংলাদেশী কর্মীদের জন্য পুনরায় খুলে দেয়া হচ্ছে।

বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের জন্য মালয়েশিয়ান সরকার অনুমোদনও দিয়েছে। এ বিষয়ে বাংলাদেশ এবং মালয়েশিয়ান সরকারের মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষরিত হয়েছে।

আজ রোববার কুয়ালালামপুরে স্থানীয় সময় সকাল ১১টায় এ সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

বাংলাদেশ সরকারের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী ইমরান আহমদ এবং মালয়েশিয়া সরকারের মানব সম্পদ মন্ত্রী দাতুক সেরি এম সারাভানান নিজ-নিজ সরকারের পক্ষে এ সমঝোতা স্মারকে (এমওইউ) স্বাক্ষর করেন। আজ ঢাকায় প্রাপ্ত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

এতে বলা হয়, সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব ড. আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন, কুয়লালামপুরে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মোঃ গোলাম সারোয়ার এবং মালয়েশিয়ার মানব সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ডেপুটি সেক্রেটারি জেনারেল দাতু মুহাম্মদ খাইর আজমান বিন মোহামেদ আনুয়ার, বিএমইটির মহাপরিচালক মোঃ শহীদুল আলমসহ উভয় দেশের পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

মালয়েশিয়ার সরকার ২০১৮ সালের অক্টোবরে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে স্থগিতাদেশ দেয়। তবে, ভ্রাতৃপ্রতিম এই দুই দেশের পারস্পরিক সম্পর্কের ভিত সুদৃঢ় থাকায় বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগে মালয়েশীয় সরকারের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারপূর্বক বাংলাদেশী কর্মী পুনঃ নিয়োগ শুরু করার লক্ষ্যে উভয় দেশের মধ্যে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের সভা অনুষ্ঠিত হয়।

প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের নেতৃত্বে আন্তঃমন্ত্রণালয় কমিটির পরামর্শ এবং কুয়ালালামপুরস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের অবিরাম কূটনৈতিক প্রচেষ্টার পাশপাশি কূটনীতিকদের নিরলস পরিশ্রমের কারণে মালয়েশিয়া সরকার সম্প্রতি তাদের স্থগিতাদেশ প্রতাহার করে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগের অনুমোদন দেয়।

এমওইউ স্বাক্ষরের ফলে বাংলাদেশ থেকে কর্মী নিয়োগ, কর্মসংস্থান এবং অভিবাসী কর্মীদের প্রত্যাবাসনের আদর্শ কাঠামো প্রতিষ্ঠার সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এই সমঝোতা স্মারকের আওতায় বাংলাদেশী কর্মীদের মালয়েশিয়া প্রান্তের সকল খরচ নিয়োগকর্তা বহন করবেন। এরমধ্যে, রিক্রুটমেন্ট এজেন্সি নিয়োগ, মালয়েশিয়ায় আনয়ন, আবাসন, কর্মে নিয়োজন এবং কর্মীর নিজ দেশে ফেরত প্রেরণের খরচ বহনের বিষয়টিও রয়েছে।

এমওইউ অনুযায়ি নিয়োগকর্তা নিজ খরচে মালয়েশিয়ান রিক্রুটিং এজেন্ট নিযুক্ত করতে পারবেন। মালয়েশিয়ায় আসার পর বাংলাদেশি কর্মীর ইমিগ্রেশন ফি, ভিসা ফি, স্বাস্থ্য পরীক্ষার খরচ, ইনস্যুরেন্স সংক্রান্ত খরচ, করোনা পরীক্ষার ব্যয়, কোয়ারেন্টাইন সংক্রান্ত খরচসহ সকল ব্যয় মালয়েশিয়ার নিয়োগকর্তা/কোম্পানী বহন করবেন। নিয়োগকর্তা কর্মীর মানসম্মত আবাসন, বীমা, চিকিৎসা এবং কর্মীদের কল্যাণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে লক্ষ্য রাখবেন।

এসব নিয়মাবলীর সঠিক বাস্তবায়ন করা হলে কর্মীর অভিবাসন সংক্রান্ত খরচও অনেক কমে যাবে।-বাসস